ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

১০ টাকা কেজির চাল কিনে বেজায় খুশি তারা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৮
১০ টাকা কেজির চাল কিনে বেজায় খুশি তারা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজির চাল কিনছে গরীব মানুষ

বগুড়া: স্বামী ও ছোট ছোট দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে শিরিনা বেগমের অভাবের সংসার। দিনমজুরের কাজ করে অভাবী সংসার চালান স্বামী মমতাজ। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বমুখি বাজারে হাপিয়ে উঠতে হয় তাদের। যেন নুন আনতে পানতা ফুরানোর জো। তবু বেঁচে থাকার লড়াইয়ে প্রতিনিয়ত হাড়ভাঙা খাটুনি চালিয়ে যাচ্ছেন এ দম্পতি।

বুধাবার (৭ মার্চ) সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের ৩০ কেজি চাল কেনার পর বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে শিরিনা বেগম এমনই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এখনও সচল বলে কাজ করতে পারি।

কিন্তু সবকিছুর বাড়তি দামের কারণে সামলে উঠতে পারি না। অনেকের কাছে ৩০ কেজি চাল স্বল্প হলেও আমার কাছে অনেক। চাল নিয়ে অন্তত কয়েক সপ্তাহ চিন্তা করতে হবে না। ১০ টাকা কেজির চাল কিনতে পেরে বেজায় খুশি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার এই দম্পতি।

একই অনুভূতির কথা জানালেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বাসিন্দা শাহানা বেওয়া, জয়নবিবি, আব্দুর রশিদসহ বেশ কয়েকজন নিন্মআয়ের মানুষ।  
 
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে বগুড়ার ১২টি জেলায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার কার্ডধারী মোট এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৫ জন উপকারভোগী প্রত্যেকে ৩০ কেজি হিসেবে মোট ৪ হাজার ৫শ’ ৯১ দশমিক ৬৫ মেট্রিকটন চাল পাবেন।

জেলার ১২টি উপজেলার ১০৮টি ইউনিয়নে ২৮৩ জন নিয়োগ পাওয়া ডিলারের মাধ্যমে এসব চাল বিক্রি করা হচ্ছে। কার্ডধারী উপকারভোগীদের হাতে এসব চাল স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তুলে দিতে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে কতটা স্বচ্ছভাবে সংশ্লিষ্টরা গরীবের চাল গরীবের কাছে বিক্রি করতে পারে তা দেখতে এ মাসই অপেক্ষা করতে হবে। কেননা ধাপে ধাপে পুরো মার্চজুড়ে এসব চাল বিক্রি চলবে।

বুধবার একাধিক উপকারভোগী ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বছরের দু’দফা কার্ডধারী উপকারভোগীদের মাঝে ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি করা হয়ে থাকে। চলতি বছরে মার্চ ও এপ্রিলে প্রথম ধাপের চাল বিক্রি করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও নভম্বরে দ্বিতীয়ধাপের চাল বিক্রি করা হবে। অর্থাৎ বছরের পাঁচ মাস দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে তালিকা অনুযায়ী ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি করা হয়। আর একেকজন কার্ডধারী ৩০ কেজি করে এ চাল কিনতে পারেন।

সূত্রটি আরও জানায়, খাদ্যবান্ধন কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে বরাদ্দ হওয়া ১০ টাকা কেজি দরের চাল জেলার সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের নিয়োগ পাওয়া ৬০ জন ডিলার মাধ্যমে কার্ডধারী ৩০ হাজার ৯৩৮ জন উপকারভোগী, শাজাহানপুরের ৯টি ইউনিয়নের ১৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ৯ হাজার ৫৫৬ জন, শিবগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নের ৩২ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৬ হাজার ৬৫৪ জন, সোনাতলার ৭টি ইউনিয়নের ১৯ জন ডিলারের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫৩৮ জন, গাবতলীর ১১টি ইউনিয়নের ২৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৪ হাজার ৪৬ জন, সারিকান্দির ১২টি ইউনিয়নের ২৯ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৩ হাজার ২৩৭ জন, ধুনটের ১০টি ইউনিয়নের ২০ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৪ হাজার ৫০৯ জন, শেরপুরের ১০টি ইউনিয়নের ২০ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৪ হাজার ৩৭১ জন, নন্দীগ্রামের ৫টি ইউনিয়নের ১৪ জন ডিলারের মাধ্যমে ৭ হাজার ৬৩৪ জন, কাহালুর ৯টি ইউনিয়নের ১৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ৮ হাজার ৩৩৪ জন, দুপচাঁচিয়ার ৬টি ইউনিয়নের ১২ জন ডিলারের মাধ্যমে ৬ হাজার ৭৩২ জন ও আদমদীঘির ৬টি ইউনিয়নের ১৩ জন ডিলারের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫০৫ জন উপকারভোগী চাল কিনতে পারবেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাইন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, মার্চ ও এপ্রিল মাসজুড়ে কার্ডধারী উপকারভোগীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি করা হবে। সপ্তাহে দু’দিন নির্ধারিত ডিলারের কাছ থেকে এসব চাল কিনতে পারবেন তারা।  

স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চালগুলো বিক্রির কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৮
এমবিএইচ/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।