গার্ড অব অনার শেষে একে একে বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি তার কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে প্রথমে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে।
পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের পক্ষ থেকে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চে চলে আনুষ্ঠানিকতা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সৈয়দ আশরাফের পক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, তার মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম নতুন মাত্রা যোগ করেছিলো। তার ত্যাগ নতুন প্রজন্মের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে বলেন, নারী আন্দোলনে তিনি অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন। নান্দনিক শিল্পচর্চায় তিনি অবদান রেখেছেন। স্মৃতিতে সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সাহস থাকলে যে সব বাধা পেরিয়ে জয় করা যায় তার উদাহরণ ফেরদৌসী। নারীর সমস্যা, অধিকারের বিষয়ে সবসময় তিনি সোচ্চার ছিলেন। নারীর সবচেয়ে বড় শত্রু রাজাকাররা। উনি পরাজিত করেছেন তাদের। বারবার আঘাত এসেছে, তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর মতো জঙ্গি-সন্ত্রাসকে আমরা প্রতিহত করছি।
প্রিয়ভাষিণীর পরিবারের পক্ষ থেকে কন্যা ফুলেশ্বরী বলেন, সারাজীবন তিনি সংগ্রাম করেছেন। তার একটি শেষ ঠিকানা দরকার ছিলে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের পাশে সেই শেষ ঠিকানা পাওয়ায় গর্বিত লাগছে।
প্রখ্যাত এ ভাস্করের মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, সাম্যবাদী দল, স্থপতি ইনস্টিটিউট, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, নারী সংহতি, জাতীয় বিপ্লবী পার্টি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, গণজাগরণ মঞ্চ, ভিন্নধারা, কোরক নাট্য সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক বামমোর্চা, বাংলাদেশ সংগীত সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় নারীজোট, নারীমুক্তি, ছায়ানট, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সমন্বয় পরিষদ, সংস্কৃতি মঞ্চ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, নন্দন কানন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, চারুকলা ইনস্টিটিউট, নারী সংগঠন চেষ্টা।
সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের বাইরেও নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আলাদা আলাদাভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এরমধ্যে ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক, সাইফুল ইসলাম লেনিন, সেলিম রেজা, হাসান আরিফ, নেসার হোসেন, শিল্পী মনিরুজ্জামান, ফকির আলমগীর, আসিম মনির তন্ময় প্রমুখ।
বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাবি মসজিদে জানাজা শেষে বিকেল ৫টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শহীদ জননী জাহানরা ইমামের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ঘোষণা মঞ্চ থেকে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৩ মার্চ বিকেল ৪টায় প্রিয়ভাষিণীর স্মরণে নাগরিক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই মহীয়ষী নারী।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
এসএ/এএ