ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কোটার শূন্যপদে মেধাবীদের নিয়োগ: বঞ্চিত হবে না কোনো পক্ষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৮
কোটার শূন্যপদে মেধাবীদের নিয়োগ: বঞ্চিত হবে না কোনো পক্ষ

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটার শূন্যপদে মেধা তালিকায় থাকা শীর্ষ প্রার্থীদের নিয়োগের সিদ্ধান্তে কোটা ও সাধারণ প্রার্থীরা বঞ্চিত হবেন না বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান।

কোটার পদ মেধা তালিকা থেকে পূরণের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, পক্ষে বা বিপক্ষে দু’টি ভিন্ন গোষ্ঠী। যারা এ পদ্ধতি রাখতে চায় তারা মনে করে, কোটার সুবিধা নেবে।

আরেকটা ধারা মনে করে, আমরা মেধাবী, বঞ্চিত হচ্ছি। কিন্তু সরকার আছে নিজস্ব ধারায়। অর্থাৎ তাদের কোটাটাও বহাল আছে, আবার মেধাবীরাও যেন বঞ্চিত না হয়।

তিনি বলেন, এখন যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এটা দুইটার একটা সহজ সমাধান। অর্থাৎ এতে কোনো পক্ষ বঞ্চিত হচ্ছে না। মেধাবীরা মর্যাদাও পাচ্ছে আবার কোটা পদ্ধতির প্রতিও সম্মান অক্ষুণ্ন আছে। অর্থাৎ সেখান থেকেও সরকার সরে আসেনি। কাজেই আমি মনে করি, এটা সবার জন্য গ্রহণযোগ্য একটা ব্যবস্থা।
 
সচিব জানান, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি আছে। সরকারের নির্দেশেই মুক্তিযোদ্ধা, নারী, জেলা- এই ধরনের শ্রেণির জন্যে কিছু পদ সংরক্ষণ রাখা হয় এবং তাদের চাকরিতে নিয়োগের দায়বদ্ধতা আছে। আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে ওই শ্রেণির প্রার্থী পাওয়া যায় না। ধরেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০ শতাংশ কোটায় ১০০ পদের জন্য ৩০টি পদ সংরক্ষণের বিধান আছে। কিন্তু ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থী আছে, আর ২০টি পদ পূরণ করা যাচ্ছে না। একাধিকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটে, সেই পদগুলোতে নিয়োগ করা যায় না। তাতে সরকারের বিভিন্ন দফতরে জনবলের শূন্যতা সৃষ্টি হয় এবং পূরণ করা যায় না। সেই কারণে আমরা বলছি যে, এই পদে মুক্তিযোদ্ধা বা নারী বা প্রতিবন্ধী প্রার্থী যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে না- তাদের অপূর্ণ পদ মেধা তালিকায় যারা উপরে আছে তাদের দিয়ে যেন পূরণ করা যায়।
 
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেহেতু বার বার এই ধরনের কেস আসছে, কাজেই বার বার এই ধরনের ফাইল চালাচালি না করে এটার একটা সহজ সমাধান হওয়া দরকার। এখন থেকে কোনো শ্রেণির কোটাভুক্ত পদ যদি সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে মেধা তালিকায় যারা ওপরে থাকবে তাদের দিয়ে পূরণ করা যাবে।  
 
সচিব বলেন, এখানে আমি আরেকটু স্পস্ট করে বলি, এতে কোনো ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ নেই। কেউ হয়তো ভাবতে পারে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংস্কার হয়ে গেছে, এখন মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্ব কম দেওয়া হচ্ছে অথবা অন্য কোনো পদ পশ্চাৎপদ শ্রেণিকে গুরুত্ব কম দেওয়া হচ্ছে, এটি কিন্তু সেটি নয়। ব্যাখ্যাটি হচ্ছে, তাদের জন্য পদ সংরক্ষিত আছে, থাকবে।
  
কোটায় অতিরিক্ত নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে- বলে যে অভিযোগ তা নিয়ে সচিব বলেন, এটা সঠিক নয়। কোটায় যারা নিয়োগ পাবে তাদের প্রার্থীর সংখ্যা সেই পরিমাণে নেই। নতুন সিদ্ধান্তে মেধাবীরাই বেশি নিয়োগ পাবে বলে মনে করেন সচিব।
 
পদ শূন্য হওয়া নিয়ে সচিব বলেন, আমাদের ১৪ লাখ কর্মচারী আছে। তার মধ্যে দশ-পাঁচ হাজার লোক দৈনিক চাকরি থেকে অবসরে যাচ্ছে। আর দু-একটা যাচ্ছে অন্য কারণে, কেউ মারা যায়, কেউ চাকরি ছেড়ে দেয়। বিভিন্ন কারণে হতে পারে।
 
দৈনিক যেহেতু অবসরে চলে যায়, দৈনিক তো লোক নিয়োগ করা যায় না। নিয়োগের তদবির করতে হয়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, পদ পূরণের জন্য ছাড়পত্র প্রয়োজন হয়, পরীক্ষা শেষ হলে আরও অনেক… ব্যবহারিক পরীক্ষা। এসব নেওয়ার কারণে অনেক সময় লেগে যায়। যার কারণে দেখেন, ১০০টি পদে নিয়োগ করা হচ্ছে, আবার দেখা যাচ্ছে যে ২০টি পদ তৈরি হয়ে গেছে। এজন্য শূন্য পদ সব সময় থাকবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে হবে।
 
টেকনিক্যাল পদগুলোতে নিয়োগ করা গেলে মোট শূন্য পদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে যাবে বলে মনে করেন সচিব।
 
কোটা সংস্কারের প্রশ্নে সচিব জানান, এই মুহূর্তে কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে ভবিষ্যতে হতে পারে।
 
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির প্রশ্নে সচিব বলেন, এটা আলোচনার বাইরে আছে। এই রকম কোনো বিষয় সরকারের আলোচনায় নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
এমআইএইচ/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।