ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

উন্মুক্ত হলো উত্তরা গণভবনের গ্র্যান্ডমাদার হাউস লেক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৮
উন্মুক্ত হলো উত্তরা গণভবনের গ্র্যান্ডমাদার হাউস লেক উত্তরা গণভবনের গ্র্যান্ডমাদার হাউস লেক

নাটোর: দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হলো নাটোরের উত্তরা গণভবনের গ্র্যান্ডমাদার হাউস লেক, রাণীমহল, হরিণচূড়া ও আম্রকাননসহ ৮০ ভাগ জায়গা।

একই সঙ্গে উত্তরা গণভবনের হারিয়ে যাওয়া জিনিসপত্র সংগ্রহে প্রাসাদে একটি সংগ্রহশালারও উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৯ মার্চ) দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে এসব স্থান উন্মুক্ত করার ঘোষণাসহ সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন।

এসময় তিনি উত্তরা গণভবনের ভেতরে হরিণচূড়ায় রাখা শ্যামা ও শ্যামল নামে ২টি হরিণ, তিথি ও মিথি নামে ২টি ময়ুর, মিঠু ও মন্টি নামে ২টি বানর ও বিভিন্ন পশু-পাখিসহ পুরো গণভবন আটোরিকশায় চড়ে পরিদর্শন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নুরুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব সাইদুর রহমান, জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড. চিত্রলেখা নাজনীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মনিরুজ্জামান ভূঞা, সিভিল সার্জিন আজিজুল ইসলাম, এডিএম রাজ্জাকুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বানু, জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট. সিরাজুল ইসলাম, পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দিনসহ সরকারি-বেসরকারি ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।  

উত্তরা গণভবনের রাণীমহল ও আম্রকাননপরে পরিদর্শন শেষে উত্তরা গণভবনের ভেতরে সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের সভাপতিত্বে গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পরিষদ সচিব। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় মোহাম্মদ শফিউল আলম দুই দিনের সফরে নাটোরে এসেছেন। এসময় তিনি উত্তরা গণভবনে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। একই সঙ্গে তিনি উত্তরা গণভবনের গ্র্যান্ডমাদার হাউস লেক, রাণীমহল, হরিণচূড়া ও আম্রকানন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেন।

ডিসি বলেন, উত্তরা গণভবনে আগত দর্শনার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে এসব স্থান দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছিলেন। কিন্তু ব্যবস্থাপনাগত নানা সমস্যার কারণে গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি এতোদিন এসব স্থাপনা সংরক্ষিত রেখেছিল। যা আজ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হলো।

এতে উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীর সংখ্যা এখন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে, এতে সরকারের রাজস্বও বাড়বে। দর্শনার্থীরা এখানকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সর্ম্পকে আরো বেশি বেশি করে জানবেন। উত্তরা গণভবনের হারিয়ে যাওয়া জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। গণভবনকে আরও চিত্তাকর্ষক করার জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা গণভবনের পশু-পাখিরাব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, উত্তরা গণভবনের প্রাচীন স্থাপত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান রেখে এ প্রাঙ্গণে এবং এর বাইরের অংশে পর্যটন উপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকসহ সব কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মতবিনিময় সভায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে গণভবন প্রাঙ্গণে লেকে বোটিং, লেকের চারপাশে ওয়ার্কিং পথ ও উপরে ফুটওভার ব্রিজ এবং গণভবনের প্রবেশ দ্বারের সম্মুখভাগে লেকসহ শিশু পার্ক, ৪২ কক্ষের গেস্ট হাউজ, শপিং কমপ্লেক্স, সিনেপ্লেক্স, কনফারেন্স রুমসহ পর্যটন আকর্ষণীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। যার বাস্তবায়ন কাজ দ্রুত শুরু করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।

উদ্বোধন করা উত্তরা গণভবনের সংগ্রহশালায় দিঘাপতিয়া রাজ পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার্য আসবাবপত্র, পোষাক, তৈজসপত্র, বই, কাব্যগ্রন্থের পান্ডুলিপি, ডায়েরিসহ শতাধিক দ্রব্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে।

প্রায় পরিত্যক্ত রাণীঘাট চত্বরের হরিণচূড়া এলাকায় হরিণ, ময়ূর, বানর ও টিয়া পাখির সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা।

এ চত্বরে ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু রোপিত একটি হৈমন্তী গাছ শনাক্ত করে শ্বেত পাথরে গাছের নিচে বাঁধাই করে নামফলক স্থাপন করা হয়েছে।

সেসময় বঙ্গবন্ধু তৎকালীন গভর্ণর হাউজকে উত্তরা গণভবন হিসেবে ঘোষণা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ চত্বরে একটি জয়তুন গাছের চারা রোপণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৮/আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।