মিরপুর ১২ নম্বর সাত্তার মোল্লা রোডে আহাজারি করছেন রোকেয়া খাতুন ও সালাম খাঁ দম্পতি। বছর দুই আগে পটুয়াখালীর বড়বিঘা থেকে তারা এই বস্তিতে এসে বসবাস শুরু করেন।
আগুনে পুড়েছে তাদের সর্বস্ব। জমিয়ে রাখা ১১ হাজার টাকা, খাট, আলমারি, টিভি, বিছানা সবকিছুই আগুনে পুড়ে গেছে।
রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে ইলিয়াস আলী মোল্লার বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আগুনে বস্তির প্রায় দু’হাজার বসতঘর পুড়ে গেছে।
সোমবার (১২ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে ফায়ার সার্ভিসের ২১টি ইউনিটের প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল পৌনে ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তার আগেই পুড়ে ছাই হয়েছে রোকেয়া-সালাম দম্পতির সংসারের সব। দুই বছর আগে বন্যা ও নদীভাঙনে ভিটেমাটি বিলীন হয়। এরপরে আসেন ঢাকার বস্তিতে।
রোকেয়া বাসাবাড়িতে কাজ করেন আর সালাম রিকশা চালান। দুইজনের শ্রমে ভালোই দিন কাটছিলো। এখন আগুনে নিঃস্ব এই পরিবার।
বস্তির আরেক হতভাগী ভোলার নাজমা খাতুন। চার বছর আগে স্বামী ফরিদ মাঝি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এখন তিনি নাজমা, সন্তান রাসেল ও সোহেলের কোনো খবর নেন না। ভিটেমাটিও মেঘনায় বিলীন। তিন বছর আগে দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান নাজমা।
বড় ছেলে রাসেল বাসচালক। নাজমা বাসাবাড়িতে কাজ করেন। কষ্টের টাকায় তিল তিল করে সংসার গড়েছিলেন। এখন আগুনে সব পুড়েছে।
নাজমা বলেন, ‘৮ হাজার ট্যাকা, লেপ-তোশক, একটা খাট সব কিছু পুইড়া গেছে। বাকির এক বস্তা চাউলও পুইড়া গেছে। ভোলায় কিছু নাই, পানিতে নেচে। এহানে পুড়ছে আগুনে। ’
নাজমার মতো পোড়া বস্তির অনেক বাসিন্দা খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়িয়েছেন। অনেকে শিশু সন্তানসহ অন্যের বাসাবাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। কেউ কেউ এখনও পোড়া ঘরে হাতড়ে চলেছেন তাদের শেষ সম্বল উদ্ধারের আশায়।
**একটা সুতাও বের করার টাইম পাইনি
** মিরপুরে বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
** মিরপুরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে ২ হাজার ঘর
** মিরপুরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুন
বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৮
এমআইএস/আরআর