ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মাদকসেবী থেকে ‘ইয়াবা সম্রাট’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
মাদকসেবী থেকে ‘ইয়াবা সম্রাট’ ‘ইয়াবা সম্রাট’ আলমসহ আটক তিন ইয়াবা বিক্রেতা

ঢাকা: কক্সবাজারের কলাতলিতে থাকা বন্ধুদের সহযোগিতায় বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন ইয়াবাসেবী আলম (৪০)। চিংড়ি মাছের পোনা, কটেজ ও জমি বিক্রর ব্যবসা করে উন্নতি করলেও অতি লোভে একসময় ইয়াবা বিক্রি শুরু করেন তিনি।

মিয়ানমারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ইয়াবা বিক্রির পরিধি বড় করেন। এরপর গত ৪ বছরে দেশজুড়ে ইয়াবার বড় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে ‘ইয়াবা সম্রাট’ বনে যান আলম।

বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান।

বুধবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর হাজারীবাগের একটি বাসা থেকে ‘ইয়াবা সম্রাট’ আলমসহ ৪ মাদক বিক্রেতাকে আটকের বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ইয়াবা সম্রাট আলম ছাড়া অন্য আটকরা হলেন- জসিম উদ্দিন (২৩), সালাউদ্দিন (২৭) ও মিজানুর রহমান (৩৩)। এসময় তাদের কাছ থেকে এক লাখ ২৩ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ইয়াবা বিক্রির নগদ ৮১ হাজার টাকা, সাতটি মোবাইল ফোন, ব্যবসায়ের তিনটি টালি খাতা জব্দ করা হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তা আনোয়ারুজ্জামান বলেন, দ্রুত বিত্তশালী হতে গাড়ি ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা বিক্রি শুরু করেন আলম। মিয়ানমার থেকে ইয়াবা চালান এনে মজুদ করতো কক্সবাজারের কলাতলিতে নিজের গেস্ট হাউজে। পরে সেখান থেকে তার বিভিন্ন গাড়ির মাধ্যমে রাজধানীতে ইয়াবার চালান নিয়ে আসতো।  

শুধু তাই নয়, এক চালানে কমপক্ষে এক লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট আনতো আলম। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতেই একটি চালান আনার পর সে তার মোবাইল, সিমকার্ড ও চালান বহনকরা ওই গাড়ি দ্রুত পরিবর্তন করে ফেলতো। নিজের রেন্ট-এ-কার ব্যবসার আড়ালে গাড়িতে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ইয়াবা সরবরাহ করতো সে।

র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক বলেন, এ ব্যবসা প্রসার করতে করতে আলমের আপন ছোট ভাই জসিম উদ্দিনকে ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দেয় এবং সেখানে রোজ ইয়াবাসেবীদের আড্ডা বসাতো। এছাড়া ওই ফ্লাট থেকেই পাইকারী দরে ইয়াবা নিয়ে যেতো খচরা বিক্রেতারা। আটক জসিম উদ্দিন ঢাকা কলেজের সমাজবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

তিনি আরও বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া সালাউদ্দিন ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। মোটর গ্যারেজের মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতো সে। সেই কাজের সুবাদে আলমের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই থেকে ইয়াবা বিক্রিতে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতো।  

অপর দিকে, আসামি মিজানুর রহমান উখিয়ার-কক্সবাজারের যাত্রীবাহী বাসের চালক হিসেবে কাজ করতো। আলমের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর বাড়তি আয়ের আশায় গাড়িতে ইয়াবার চালান বহন করার কাজ করতো।

মূলত আলমের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই আটক জসিম, সালাউদ্দিন ও মিজানুর ইয়াবা বিক্রিতে জড়িয়ে পড়ে। আলমের আরও সহযোগী আছে যাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
পিএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।