বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১টায় সাভার উপজেলা হেডকোয়ার্টারের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
আয়োজিত মানবন্ধনে একাত্ত্বতা প্রকাশ করেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, বন্ধু মহল, স্বজন, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
এসময় হাতে হাত ধরে মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে মারুফ খানের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশের পাশাপাশি হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা
ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়া কলেজ শিক্ষার্থী মুনা বলেন, গত ২১ আগস্ট আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এসময় তিনটি মোটরসাইকেলযোগ নয়জন বখাটে যুবক আমাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতে থাকে।
‘একপর্যায়ে আমার সহপাঠী মারুফ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি লক্ষ্য করে ঘটনার প্রতিবাদ জানালে মারুফের সঙ্গে বখাটেদের কথা কাটাকাটি ঘটে। এসময় আমাকে বাসায় চলে যেতে বলে মারুফ। এরপর জানতে পারি মারুফকে ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করেছে ওই বখাটেরা। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি যাতে আর কোনো মেয়েকে ইভটিজিংয়ের শিকার হতে না হয় এবং এর প্রতিবাদ করে কোনো বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়’।
তিনি আরও আরও, মারুফ হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করার পর হত্যাকারী আমাকে এবং পরিবারের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। তাই আমি প্রশাসনের কাছে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার দাবি জানাই।
মানববন্ধন থেকে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে মারুফ খানের খুনীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাভার উপজেলা শাখার উদ্যোগে হত্যাকারীদের বাড়িঘর ঘেরাও করা হবে।
বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও নিহত মারুফের চাচা আলীনুর রহমান খান সাজুর সভাপতিত্বে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ক্রাইম রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান, দৈনিক ইনকিলাবের স্পোর্টস এডিটর রেজাউর রহমান সোহাগ, সাবেক সচিব আব্দুস সাত্তার, কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম মোল্লা ঠান্ডু, মহিলা পরিষদ নেত্রী নাসরিন মহাল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আব্দুল কাদের তালুকদার, সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক জিএস মাকসুদুর রহমান, সাভার উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন খান নঈম, সাভার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ আচার্য্য, ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান আতিক, অভি প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডে নিজের সহপাঠীর ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ঢাকা কমার্স কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী মারুফ খানকে ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করে বখাটেরা। এ ঘটনায় মারুফের ভাই লুৎফর রহমান খান মানিক বাদি হয়ে হত্যাকারী মঞ্জু, শ্যামল, প্লাবন, রহিজ, শামীম, ইমরান, মমিন ও আসুদলসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত মারুফ খান সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা মহল্লার আতাউর রহমান খান আলমগীরের ছেলে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৮
এনএইচটি