ডিবি জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৭ আগস্ট রাতে নদ্দা জগন্নাথপুর এলাকায় মনিরুল ইসলাম (৩৬) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার বাসা থেকে ১০টি বিভিন্ন ধরনের কষ্টি ও বেলে পাথরের মূর্তি, বিভিন্ন ধরনের ধাতব মুদ্রা ১৮টি, প্রাচীন তাম্রলিপি ১টি এবং ৫৭৭ খ্রিস্টাব্দসহ বিভিন্ন সময়ের কয়েকটি অতি প্রাচীন স্মারক উদ্ধার করা হয়েছে।
পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. সুফি মুস্তাফিজুর রহমান এবং ঐতিহ্য অন্বেষণের উপ-পরিচালক শারমিন রেজওয়ানার নেতৃত্বে একটি টিম পুরাকীর্তিগুলো পরিদর্শন করে এগুলোকে আসল পুরাকীর্তি বলে মত দিয়েছেন।
মনিরুল ইসলামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিবির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, মনিরুলের বড় ভাই তরিকুল ইসলাম লিটন (৪০) দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এমন প্রত্মসম্পদ সংগ্রহ করতেন। তারপর সেগুলো বিদেশে পাচার করে আসছিলেন। তরিকুল জব্দ প্রত্নসম্পদগুলো মনিরুলের বাসায় এনে জমা করেন। তবে এই চক্রের সঙ্গে মনিরুল জড়িত নয় বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। এগুলো কোন এলাকা থেকে সরবরাহ করা হয়েছে কিংবা কোন দেশে পাচার করা হতো এ বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেনি মনিরুল।
তিনি আরো জানান, মনিরুলের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা বিভিন্ন নম্বরগুলো ট্রেস করে দেখা হচ্ছে। এরপর নিশ্চিত হওয়া যাবে মনিরুল আসলেই এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা। এছাড়া, তরিকুলকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলে এই চক্র সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে ডিবির (পূর্ব) উপ-কমিশনার (ডিসি) খোন্দকার নূরুন্নবী বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে আমরা এই চক্রটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আসছিলাম। নদ্দা এলাকার ওই বাসায় বিপুল পরিমাণ প্রত্নসম্পদ মজুদ রয়েছে এটি নিশ্চিত হওয়ার পর ওই বাসাটিতে অভিযান চালানো হয়। উদ্ধার প্রতিটি প্রত্ননিদর্শনই দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জন্য অমূল্য সম্পদ বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন। এর মধ্যে কিছু কিছু নিদর্শন অত্যন্ত দুর্লভও।
কিন্তু গ্রেফতার মনিরুল প্রত্নসম্পদগুলো শুধু তার হেফাজতেই রেখেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। মূল হোতা তরিকুলকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা গেলে চক্রটি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে মনিরুল ও তরিকুলকে আসামি করে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৮
পিএম/এএ