মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া হেলমেট ছাড়া কোনো রাইডারকে পাম্পে তেল না দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া রংপুর বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় এই থিওরি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট দুপুরে রংপুর জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ পেট্রোল পাম্প মালিকদের হেলমেট ছাড়া বাইকারদের কাছে জ্বালানি বিক্রি না করার আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ৩০ আগস্ট থেকে হেলমেটবিহীন বাইকারদের কাছে তেল বিক্রি বন্ধ শুরু করেন পাম্প মালিকরা।
শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রংপুর জেলা পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসেসিয়েশন ও জেলা পুলিশের এক যৌথসভায় হেলমেট ছাড়া বাইকারদের জ্বালানি না সরবরাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে মোটরসাইকেল শোরুমে বিক্রির সময় ক্রেতার কাছে বাধ্যতামূলক হেলমেট বিক্রি, প্রতিটি পেট্রোল পাম্পে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ও পাম্পগুলোতে সচেতনতামূলক ব্যানার প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রংপুরের বিভিন্ন পাম্পে পুলিশ মোতায়েন করা হয় যাতে এই সিদ্ধান্তের ফলে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়। এতে সর্বমহলে ব্যাপক সাড়া পড়লেও বিপাকে পড়েন বাইকাররা। যার ফলে রংপুরের হেলমেট বিক্রিও বেড়ে যায়। জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পাম্পগুলোতে বিভিন্ন সাইনবোর্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া লক্ষ করা গেছে। বাধ্য হয়ে হলেও বাইকারদের হেলমেট পরিধানের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। যার ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমে যাবে। সেইসঙ্গে নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা পালন করছে এই থিওরি।
এদিকে রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও গাইবান্ধাতে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সপ্তাহের মধ্যে পুরো বিভাগেই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কর্মসূচি সফল করতে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাই রংপুর জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার, আমরা একে স্বাগত জানাই। বাইক দুর্ঘটনায় নিহতদের বেশিরভাগ কিন্তু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েই মারা যায়। এই থিওরি বাইকারদের জীবনের অনেকখানি সুরক্ষা দেবে।
রংপুর চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ও পেট্রোল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সরোয়ার টিটু সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছিল। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি।
তিনি জানান, রংপুরে ৩৭টি পেট্রোল পাম্প রয়েছে। পেট্রোল নিতে মোটরসাইকেল চালকদের পাম্পে আসতে হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে।
বিষয়টি নিয়ে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) সাইফুর রহমান সাইফ বাংলানিউজকে বলেন, মাথায় হেলমেট না থাকার কারণে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের প্রায়ই বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু হেলমেট থাকলে এ ক্ষতিও কম হয়। তাই নিজের জীবনের সুরক্ষার জন্য হলেও সবাইকে এই সিদ্ধান্ত মেনে চলা উচিৎ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮
আরআর