ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সেই সোনার বার ও বিদেশি মুদ্রার চার্জশিট অনুমোদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮
সেই সোনার বার ও বিদেশি মুদ্রার চার্জশিট অনুমোদন শুল্ক গোয়েন্দা ও গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে উদ্দার হওয়া সেই বিদেশি মুদ্রা

ঢাকা: ৪০ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার ৩৭৫ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত স্বর্ণ চোরাচালানি শেখ মোহাম্মদ আলী ওরফে এস কে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) আলোচিত এ মামলার চার্জশিট অনুমোদন দেয় দুদক। গত বছরের ১৩ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় রমনা মডেল থানায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দীন আহাম্মদ।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণী অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়ের এক স্মারকমূলে ২০১৬ সালের ১২ জুলাই আসামি শেখ মোহাম্মদ আলী ওরফে এস কে মোহাম্মদ আলীর নামে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির আদেশ দেয় দুদক।

নোটিশের জবাবে মোহাম্মদ আলী ওই বছরের ৩১ আগস্ট দুদকের সচিব বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে শেখ মোহাম্মদ আলী ৪ কোটি ৮৮ লাখ ৬৬ হাজার ১৫০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ২৫ কোটি ৯০ লাখ ৩০ হাজার ৪৭৩ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৩০ কোটি ৭৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দেন।

দুদকের তদন্তে পাওয়া তথ্য মতে অভিযুক্ত শেখ মোহাম্মদ আলী দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর স্থাবর অংশে বর্ণিত মালঞ্চ কুমারপাড়া, সিলেট সদর, সিলেট (বাড়ি নং-১৩/৩, মানিকপীর রোড, কুমারপাড়া, সিলেট) ঠিকানায় শুধু জমি আছে বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু সম্পদ বিবরণী তদন্ত/যাচাইকালে ওই জমির উপর নির্মিত ৬ তলা ভবনটি সিলেট গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী কর্তৃক পরিমাপ গ্রহণ করা হয়। ভবন পরিমাপে তার নির্মাণ ব্যয় ৯৫ লাখ ১১ হাজার ৩৭৫ টাকা নির্ধারিত হয়। যা তিনি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে (ভবন) ঘোষণা দেননি। তাছাড়া তার নামে বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লট নং-৩, রোড নং-৪০১, সেক্টর-১৬, পূর্বাচল নুতন শহর প্রকল্প, রাজউক, ঢাকা, জমির পরিমাণ-১০ কাঠা। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩০ লাখ টাকা (বাস্তবে ৩০ কোটি) দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ঘোষণা দেননি।

এতে আরো দেখা যায়, শেখ মোহাম্মদ আলী এক কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ৩৭৫ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন। গোপনকৃত ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১ কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ৩৭৫ টাকার সম্পদসহ মোট ৬ কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৫ টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়।

তাছাড়া দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে আসামি শেখ মোহাম্মদ আলী ওরফে এস কে মোহাম্মদ আলী তার নিজ নামে মোট ২৫ কোটি ৯০ লাখ ৩০ হাজার ৪৭৩ টাকার অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তকালে প্রাপ্ত রেকর্ড/তথ্যমতে ৬১ দশমিক ৫৩৮ কেজি স্বর্ণ, যার মূল্য ৩০ কোটি ৭৬ লাখ ৯০ টাকা, তিন কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা ও ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের দেশি টাকাসহ মোট ৩৯ কোটি ৬৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন।

২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর মোহাম্মদ আলীর পল্টনের বাসা থেকে সোনার ৫২৮টি বার ও ৪ বস্তা বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আলোচিত ওই ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলীকে আটক করা হয়। তার বাড়ি যশোরে। তিনি নিজেকে একবার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী আরেকবার আবাসন ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। ওই বাসা থেকে সোনা চোরাচালানের ব্যবসা করা হয়, এমন খবরের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮
আরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।