ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫ কোটি জাল টাকা ছাড়ার পরিকল্পনা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫ কোটি জাল টাকা ছাড়ার পরিকল্পনা! জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর্থিক লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রত্যাশায় বসে নেই অপরাধীরাও। এ সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪-৫ কোটি জাল টাকা মার্কেটে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল একটি জাল টাকা তৈরি চক্রের।

তবে গোয়েন্দাদের তৎপরতায় অপরাধী ওই চক্রের সব পরিকল্পনাই ভেস্তে গেছে। ৫১ লাখ জাল টাকা ও অন্তত ৭ কোটি জাল টাকা তৈরির উপকরণসহ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ডিবি উত্তর বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) সুমন কান্তি চৌধুরীর নেতৃত্বে রাজধানীর তুরাগ এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. আবুল হোসেন ওরফে ইমন (৩৫), শেখ সুমন (৩২), মো. ছগির হোসেন ওরফে শাহীন (৪২), মো. ইকবাল হোসেন (৩২), স্বপ্না (১৯) ও তৌকীর আহম্মেদ ওরফে সুজন (৩০)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে আসল ২৯ হাজার ৮০০ টাকা, ৫১ লাখ জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ, ২টি কালার প্রিন্টার, টাকা তৈরির বিভিন্ন কাগজ, জাল টাকায় ব্যবহৃত ফয়েল পেপারসহ বিপুল পরিমাণ সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।

এসি সুমন কান্তি চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ থানাধীন একটি বাড়ির ৬ষ্ঠ তলার বাসিন্দা আবুল হোসেন ওরফে ইমনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। ইমন রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার জাল নোট প্রস্তুতকারক ও ক্রয় বিক্রয়ের অন্যতম হোতা। বর্তমানে সে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ জালনোট প্রস্তুতকারী।

চক্রের মূলহোতা ইমনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, ইমন তার অন্যতম সহযোগী শেখ সুমন, ছগির, ইকবাল, স্বপ্না এবং নিন্মবিত্ত লোকদের দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তরাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকার ব্যবসা করে আসছিলেন। এছাড়া সুজন এই কারখানায় প্রিন্টের কাজে ব্যবহৃত কালি (কার্টিজ) উচ্চ মূল্যে সরবরাহ করতো।

ইমন প্রথমে কাউছার নামে একজনের সঙ্গে জাল টাকা তৈরির সহযোগিতা করতেন। পরবর্তিতে ২০১৩ সাল থেকে নিজেই সরঞ্জামাদি কিনে জালটাকা তৈরি শুরু করেন। তিনি প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি টাকার জালনোট তৈরি করে তার নিয়োজিত ডিলারের মাধ্যমে সারাদেশে বাজারজাত করে আসছিলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর্থিক লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনায় সে ৪-৫ কোটি জাল টাকা মার্কেটে ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল।

এ চক্রের এক লাখ জাল টাকা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা, পরবর্তীতে সে পাইকারি বিক্রেতার কাছে ১৪-১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। পাইকারি বিক্রেতা ১ম খুচরা বিক্রেতার কাছে ২০-২৫ হাজার টাকা এবং ১ম খুচরা বিক্রেতা ২য় খুচরা বিক্রেতার কাছে ৪০-৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। এরপর ক্রমান্বয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের মাধ্যমে এই জালনোট বাজারে বিস্তার করতো। তখন একলাখ জাল টাকা আসল এক লাখ টাকার সমান হয়ে যায়।

এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান এসি সুমন কান্তি চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।