শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে (কাজী বশির আহমেদ মিলনায়তনে) এ কর্মী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ১৪ দলের শরিক দলগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে এ আয়োজন জনসমাবেশে রূপ নেয়।
এ সমাবেশ থেকে আগামী ৯ অক্টোবর রাজশাহী, ১০ অক্টোবর নাটোর এবং ১৩ অক্টোবর খুলনায় ১৪ দলের সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া অক্টোবর মাসেই ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণাও দেওয়া হয়।
এ কর্মসূচি ঘোষণা করে ১৪ দলের মুখপাত্র, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। ১৪ দলের কর্মীদের ঘরে বসে থাকার সময় নেই। আপনারা প্রস্তুত থাকুন, ডাক দিলে বেরিয়ে আসতে হবে।
নাসিম দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের ছোট খাটো ভুল থাকতে পারে, আমরা সেই ভুলগুলো সমাধানের চেষ্ট করছি। এখন আপনারা যদি ভুল করেন তাহলে দেশ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পাটির (জেপি) চেয়ারম্যান পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদের (একাংশের সভাপতি) শরিফ নুরুল আম্বিয়া, জাসদ (আরেক অংশের) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাঈজভান্ডারি, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম খান প্রমুখ।
আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি যখন স্বচ্ছ নির্বাচনের কথা বলে তখন ‘ভুতের মুখে রাম নাম’ শোনায়। নির্বাচন আসছে আজ আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া যখন পানির মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন, তখন খড়কুটো ধরে বাঁচার চেষ্টা হচ্ছে। তাকে টেনে তোলার জন্য যুক্তফ্রন্ট, গণফোরাম দিয়ে জাতীয়, অমুক তমুক গঠন করা হচ্ছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের ১৪ দলের সকল নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। যেন তারা আবার নির্বাচন ঠেকানোর নামে রেললাইন উপড়ে ফেলতে না পারে, আবার যেন পেট্রোল বোমা না মারতে পারে। সবাইকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। ড. কামাল হোসেন ও ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘জাতীয় ঐক্য’র সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মাঠে নেমেছে একটি মহল। আজকে আমরা সমবেত হয়েছি এই মহানগর নাট্যমঞ্চে, কয়েকদিন আগে যারা হাতে হাত মিলিয়েছে তাদের জবাব দিতে। এরা কারা? এরাই ১-১১ এর সেনাশাসিত সরকারের পরামর্শদাতা। বিভিন্ন দল থেকে বাদপড়া, বহিষ্কা হওয়া নেতারা আজকে ঐক্যে যুক্ত হয়েছে। তারাই ১-১১ এর সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে, আবার তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে- যদি কিছু পায়। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতেই আজকের সমাবেশ। যদি আবার আগুন সন্ত্রাস, হত্যা হয়, তবে জনগণ এবার ক্ষমা করবে না।
‘জাতীয় ঐক্য’র সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, তারা ঐক্য করেছে, কিসের ঐক্য? তারা বাঘ মারার ডর দেখাচ্ছে। বাঘ মারতে যাওয়ার ডর আমাদের দেখিয়ে লাভ হবে না। ড. কামাল হোসেন ১৯৭৮ সালের নির্বাচনে প্রচার সমাবেশে উপস্থিত না থেকে পালিয়ে দেশের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। আরেক জন বি. চৌধুরী যিনি তারেকের বাহিনীর তাড়া খেয়ে রেললাইন ধরে পালিয়েছিলেন। আর তারেক দুর্নীতি করে দেশের বাইরে পালিয়ে আছে। এরা মিলে জোট হয়েছে। এরা নির্বাচন ঠেকাতে চায়। আপনারা সতর্ক থাকুন।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, সামনে নির্বাচন, যথাসময়েই নির্বাচন হবে। ষড়যন্ত্র করে কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। নির্বাচনের বিকল্প অনেক কিছুই দেখেছি কিন্তু তাতে দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ হয় না। তাই সকল ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করে সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে।
এ কর্মী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, গণআজাদী লীগের এসকে সিকদার, আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
এসকে/এইচএ/