ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সুনাম হত্যাকারীরা দেশ ছেড়ে পালাতে পারে, শঙ্কা বাবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮
সুনাম হত্যাকারীরা দেশ ছেড়ে পালাতে পারে, শঙ্কা বাবার সংবাদ সম্মেলনে সুনামের বাবা আব্দুল আহাদ লেচু মিয়া। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে আলোচিত সুনাম মিয়া (২১) হত্যা মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছাড়তে পারে আশঙ্কা করছেন নিহতের বাবা আব্দুল আহাদ লেচু মিয়া।

শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি।
 
সংবাদ সম্মেলনে আহাদ লেচু বলেন, খুনের ঘটনার একমাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ আসামিদের খোঁজে পাচ্ছে না।

তবে তিনি জানতে পেরেছেন, আসামিরা পাসপোর্ট তৈরি করেছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে ঢাকায় রয়েছে প্রভাবশালী সন্ত্রাসী শিব্বির মেম্বারসহ এজাহার নামীয় পাঁচ আসামি। জামিন পেলেই দেশ ছাড়াবে তারা।
 
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শিব্বিরের ছোট ছেলে তানিম বাজারে যাওয়ার জন্য সুনামকে ডেকে নিয়ে যান। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার ডাক বাংলোর একটি পরিত্যক্ত ঘরে সুনামের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। তার মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার পরনের জামা দেখে তার মা কাজল বেগম মরদেহ শনাক্ত করেন। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দু’টি হাত মোজা আলামাত হিসেবে জব্দ করে পুলিশ।  
 
খুনের ঘটনায় প্রভাবশালী সন্ত্রাসী শিব্বির ও তার ভাই জুবায়ের আহমদ, ছেলে টুনু মিয়া, নাসিম মিয়া, তানিম মিয়া ও আব্দুস শহীদ দুলু মিয়ার ছেলে রিমন মিয়ার নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন লেচু মিয়া।
 
কিছুদিন আগে ঘটনাস্থল ডাকবাংলো ভূমি অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শিব্বিরের চাচাতো ভাই শামসুজ্জামান শিমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি হত্যাকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার সঙ্গে এজাহার নামীয়দের নাম জানিয়েছেন।
 
ছেলে হত্যার কারণ বর্ণনা করে লেচু মিয়া বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শিব্বির গংদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। একই বাড়ির বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও এ নিয়ে মারামারি হয়েছে। আদালতে মামলাও বিচারাধীন।
 
এছাড়া গত মার্চে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বড় ছেলে আকসার মিয়া ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারটি ভালোভাবে নেননি শিব্বির। নির্বাচনের পরদিনই তিনি আমার সন্তানদের হত্যার হুমকি দেনও জানান লেচু মিয়া। ওই নির্বাচনে সুনাম তার ভাইয়ের পক্ষে গণসংযোগ করেছিল।
 
তাছাড়া শিব্বিরের চাচাতো বোন নাদিয়ার সঙ্গে সুনামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। হত্যাকাণ্ডের পর তার বালিশের নিচ থেকে মেয়েটির দেওয়া একটি চিরকুট থেকে গভীর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে- যোগ করেন নিহতের বাবা লেচু।
 
সুনামের উপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তার মা কাজলকে শাসিয়ে ছিলেন শিব্বির। ছেলের জন্য পস্তাতে হবে বলেও মাকে বলে হুমকি দেন শিব্বির। এরই জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে মনে করছেন লেচু মিয়া। আর হত্যাকারীরা গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখী করা এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করতে প্রশাসনসহ সব মহলের সহযোগিতা চেয়েছেন ছেলে হারা এ বাবা।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
এনইউ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।