শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রামু সংহিসতার ছয় বছর পূর্তিতে দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করে রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদ।
এর মধ্যে রামু লালচিং-সাদাচিং ও মৈত্রী কমপ্লেক্সে বুদ্ধপূজা, সংঘদান ও অষ্টপরিষ্কার দান, পঞ্চশীল গ্রহণ, ধরমসভা এবং সন্ধ্যায় দেশ ও বিশ্বের শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামু সহিংসতায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বুদ্ধের পবিত্র ধাতু, বুদ্ধমূর্তি, বৌদ্ধ বিহার, পবিত্র ত্রিপিটকসহ হারিয়ে যাওয়া সকল স্মৃতির উদ্দেশ্যে পূণ্যদান করতেই প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদের আহ্বায়ক রজত বড়ুয়া রিকু।
রামু শ্রীকুল পুরাতন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উঁ ছেকাচারা মহাথের’র সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান ধর্মদেশকের দেশনা প্রদান করেন, বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’র অধ্যক্ষ ও ভূবন শান্তি একশ ফুট সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধমূর্তির প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক করুণাশ্রী মহাথের।
ধর্মদেশনা করেন রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের শীলপ্রিয় থের, ঝিলংজা বৌদ্ধ বিহারের সুগতপ্রিয় থের, রামু মৈত্রী বিহার অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাতিলোক ভিক্ষু প্রমুখ।
স্মরণসভায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বলেন, ২০১২ সালের ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় যে সাম্প্রদায়িক হামলা হয় তাতে অনেক বৌদ্ধ বিহার, বসতঘর ধ্বংস হয়ে যায়। এ ঘটনায় রামু হাজার বছরের সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এবং ছয় বছর আগে আজকের দিনেই সেই সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ছয় বছরে রামুতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনেকটা ফিরে এসেছে। সেই ক্ষত ভুলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার চেষ্টা করছে রামুর বৌদ্ধরা।
বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আরো বলেন, ঘটনার পরপরই সরকার এবং দেশের মানুষ যেভাবে এগিয়ে এসেছে এজন্য বৌদ্ধরা দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। এ জন্যে আমরা কৃতজ্ঞ। তবে এমন ঘটনার বিচার না হওয়ায় আমরা হতাশ।
কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদের আহ্বায়ক রজত বড়ুয়া রিকু। অনুষ্ঠানে অর্ধশত বৌদ্ধ ভিক্ষু, শ্রামণ ও বিভিন্ন বৌদ্ধগ্রামের উপাসক-উপাসিকা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
এমজেএফ