ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষণের পর খাদিজাকে গলাটিপে হত্যা করে শাকিব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৮
ধর্ষণের পর খাদিজাকে গলাটিপে হত্যা করে শাকিব

নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে শিশু খাদিজাকে (৭) চাচাতো ভাই শাকিব ধর্ষণ করে ঘটনা ধামাচাপা দিতে গলাটিপে হত্যার পর বস্তাবন্দি মরদেহ বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেয়।

মঙ্গলবার (০২ অক্টোবর) রাতে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

এর আগে সোমবার (০১ অক্টোবর) বিকেলে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মমিনুল ইসলামের আদালতে ঘাতক শাকিব এ হত্যাকাণ্ড ও মরদেহ গুমের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে শিশু খাদিজাকে হত্যা ও তার মরদেহ গুমের চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

ওসি সেলিম রেজা বলেন, দীর্ঘ ১০ মাস পর আলোচিত শিশু খাদিজা হত্যার কারণ ও মরদেহ গুমের আসল রহস্য জানা গেছে। ব্যাপক অনুসন্ধান ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার খুবজিপুর ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শাকিবকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শাকিব এ হত্যার দায় স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনাসহ সহযোগিদের বিষয়ে তথ্য দেন। সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়। এ কাজে তার মা ও চাচা জড়িত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
 
পরে তার দেওয়া তথ্য মোতাবেক রাতেই মা সোনালী বেগম ও চাচা মোর্শেদ আলীকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
 
তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আপন চাচাতো ভাই শাকিবের ঘরে টেলিভিশন দেখতে যায় শিশু খাদিজা। এ সময় তাকে একা পেয়ে শাকিব ধর্ষণ করেন। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার ভয়ে নিজেই তাকে গলা টিপে হত্যা করেন।
 
পরে শাকিব ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাটি তার মা সোনালীকে জানান। সোনালী তার স্বামী মিলন ও ভাসুর মোর্শেদকে বিষয়টি জানান। এরপর মোর্শেদের পরিকল্পনায় খাদিজার মরদেহ বস্তায় ভরে খাটের নিচে দু’দিন রাখা হয়। সুযোগ বুঝে ২২ ডিসেম্বর দিনগত রাত ২টার দিকে তারা চারজন মিলে বস্তাবন্দি মরদেহ বাড়ির পাশের দিঘিতে ফেলে দেন। পরের দিন সকালে পুকুরে মরদেহ পাওয়ার খবরটি তাদের পরিবার থেকে পুলিশকে জানানো হয়। এছাড়া নিখোঁজের দিন ভাতিজির মরদেহ গুমের পরিকল্পনাকারী মোর্শেদই গুরুদাসপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
 
মরদেহ উদ্ধারের পর খাদিজার বাবা মনিরুল ইসলাম মধু বাদী হয়ে প্রতিবেশী নাজমা, নাইম, নাজমুল, বাদল, শহিদুলসহ সাতজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী নাজমা, নাইম, নাজমুল, বাদল, শহিদুলসহ ছয়জন বিনা অপরাধে ১০ মাস হাজতবাস করেছেন। বর্তমানে চার আসামি হাজতে আছেন। তারা নিরাপরাধ বলে দাবি করেন তিনি।
 
ওসি বলেন, নিহত শিশু খাদিজার বাবা মনিরুল ইসলাম মধু, চাচা মোর্শেদ ও হত্যাকারী শাকিবের বাবা মিলন সম্পর্কে আপন চার ভাই। তাদের বাড়ি গুরুদাসপুরের বিলশা গ্রামের ভক্তিপাড়ায়।
 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরে আলম সিদ্দিকী বাংলানিউজকে জানান, প্রথম থেকেই আটক শাকিবসহ পরিবারের লোকজনের আচার-আচরণে সন্দেহজনক ছিল। একপর্যায়ে শাকিবকে নির্ভয় ও আইনের সহযোগিতার আশ্বাস দিলে ঘটনা সব খুলে বলেন। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৮
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।