ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৮
প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীরা/ছবি: পিআইডি

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার (০৩ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে কোটা পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
 
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোটা থাকবে না।


 
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংষ্কারের দাবিতে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। প্রাথমিকভাবে ১৫ কার্যাদিবেসর মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে আরো ৯০ কার্যদিবস সময় পায় এ কমিটি।
 
গত ১৭ সেপ্টেম্বর কোটা সংস্কার বা পর্যালোচনা কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোটা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেন।
 
সাধারণত প্রতি সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেন ২১ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে। নিয়মিত বৈঠকটি দু’দিন পিছিয়ে নেওয়া হয়।
 
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ওই দিন বলেন, নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত অর্থাৎ আগের আগে যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি বলা হতো, সেগুলো নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদগুলো মেধা ভিত্তিক নিয়োগ হবে।
 
কমিটির প্রতিবেদন বুধবারের বৈঠকে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয় জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনো কোটা পদ্ধতি থাকবে না। সরাসরি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে।
 
তবে সময়ের প্রেক্ষাপটে কোনো প্রয়োজন দেখা দিলে কোন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটার প্রয়োজন দেখা দিলে বা কোটার অপরিহার্যতা দেখা দিলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে।
 
তিনি আরো বলেন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে যে ব্যবস্থা আছে তা বহাল আছে।
 
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজ-কালের মধ্যে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন হবে এবং প্রজ্ঞাপনের পর থেকেই কার্যকর হবে।
 
৪০তম বিসিএস বা বিদ্যমান বিজ্ঞাপনে কোটার ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।  
 
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বা প্রতিবন্ধিদের বিষয়টি তাদের আইনে উল্লেখ রয়েছে।
 
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা দীর্ঘ দিনের। ১৯৭২ সালের ৫ নভেম্বর এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, আধাসরকারি, প্রতিরক্ষা এবং জাতীয়করণকৃত প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়।
 
পরে বিভিন্ন সময়ে এ কোটা পদ্ধতির সংস্কার, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করেছে সরকার।
 
সরকারি চাকরিতে বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, পশ্চাদপদ জেলাগুলোর জন্য কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি সংরক্ষিত চালু আছে। সব মিলিয়ে শতকরা ৫৬ ভাগ কোটা পদ্ধতি রয়েছে।
**জাতীয় পরিবেশ নীতিতে আরো ৯ খাত যুক্ত
**মন্ত্রিসভায় স্বর্ণ নীতিমালা অনুমোদন
**বিশেষ নিয়োগ-পুনরায় কোটা প্রবর্তনে আপত্তি
**কোটা বহাল চায় ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’
**ওরা চাইছিল কোটা বাতিল হোক, বাতিল করে দিলাম
**কোটা বহাল দাবিতে শাহবাগ অবরুদ্ধ

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৮
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।