ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

দ্বিমুখী আন্দোলনের ডাকে অচল ঢাকা ডেন্টাল কলেজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৮
দ্বিমুখী আন্দোলনের ডাকে অচল ঢাকা ডেন্টাল কলেজ তালাবদ্ধ ঢাকা ডেন্টাল কলেজ-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সরকারি ডেন্টাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা ডেন্টাল কলেজে বিগত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে অবরুদ্ধ রয়েছে কলেজের মূল ভবনের গেট এবং তৃতীয়দিনের মতো ভেতরে কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। 

এদিকে প্রশাসন ভবন অবরুদ্ধ থাকায় গত দেড় মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে কলেজটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। যে কারণে বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) থেকে বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বুধবার (৩ অক্টোবর) এ ঘোষণা দেন কলেজটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে কলেজটির ৩য় শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন মোল্লা এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় দেড় মাস ধরে আমাদের বেতন আটকে আছে। কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানাচ্ছি। আমরা ঘোষণা দিয়েছি এ অবরোধ বন্ধ না হলে আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে কলেজের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করবো।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ডে উদযাপন করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যকে সে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোয় তিনি অসন্তুষ্ট হন। এ নিয়ে কলেজ প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

ঠিক তার একদিন পরে অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা ডেন্টাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ডা. আবুল কালাম বেপারীকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ন্যস্ত করা হয়। সেদিন থেকেই কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন সরকারি দলের স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতা।  

এর নয়দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর ডেন্টাল কলেজে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবিরকে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে তাকে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কর্মস্থলে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে ডেন্টাল কলেজে যোগ দিতে গেলে তাকে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে রাখা হয়।  

এরপর মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) থেকে কলেজের মূল ফটকে ও ভবনের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মতে, আগের অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে আনতে হবে। বুধবারও তাদের আন্দোলন চলছে।

এদিকে দুপুরে মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার মাসুদ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলন বন্ধ করতে বলেছেন। এসময় তিনি শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের বলেন, আপনারা সরকারি কার্যক্রমে বাধা দিয়ে সরকারবিরোধী কাজ করছেন। এটা বন্ধ করেন। আপনারা ক্লাসে ফিরে যান।  

কিন্তু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন বন্ধ না করে কলেজের কর্মচারীদের আন্দোলনের ডাক শুনে আরও জোরে স্লোগান শুরু করেন।

সামগ্রিক বিষয়ে কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি নিয়ম তারা লঙ্ঘন করছে। তাদের বলেছি ক্লাস চালু রেখে দাবি আদায়ের চেষ্টা কর। কিন্তু তারা তা করছে না।

নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ দ্বিতীয় দিনে মূল কার্যালয়ের সামনে তার দায়িত্ব পালন করছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৮
এমএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।