মঙ্গলবার (০৯ অক্টোবর) রাজধানীর এয়ারপোর্ট সড়কে হোটেল লা মেরিডিয়ানে ‘দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া মেরিটাইম অ্যান্ড লজিস্টিক ফোরাম ২০১৮-’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নদী ও নৌযান উন্নয়নে এবং মানুষ ও পণ্য পরিবহনে নদীর নাব্যতা রক্ষা, নদীর মাধ্যমে জলাধার সৃষ্টি ও নিরাপদ নদীপথ উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
অতীতে পণ্য পরিবহনের গৌরবের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেল ও সড়কপথের উন্নয়নের আগে নৌপথই ছিল বাংলাদেশের পরিবহনের প্রধান বাহন। কারণ এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রায় ৭০০ নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে।
‘আমাদের রয়েছে পদ্মা, যমুনা, মেঘনার মতো সুবিশাল নদী এবং এর অসংখ্য শাখা-প্রশাখা। প্রাকৃতিকভাবে বাংলাদেশের নদী, জলাশয়গুলো একে-অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। বর্ষাকালে এগুলো দুকূল ভাসিয়ে একাকার হয়ে যায়। ’
তিনি বলেন, নাব্যতা সঙ্কটের কারণে জলপথের গৌরব কিছুটা ম্লান হলেও এখনও তা আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বৈদেশিক বাণিজ্যের সিংহভাগই সমুদ্রপথে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এখনও জলপথের উপরই অনেকটা নির্ভরশীল। বিপুল সংখ্যক মানুষ এই খাতের সঙ্গে জড়িত।
‘অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থাকে যৌক্তিক ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবহন মাধ্যম হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। এজন্য আমরা বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌরুটগুলো চালু করা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ’
এ সময় বাংলাদেশের নৌযান নির্মাণে দক্ষতার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সুদূর প্রাচীনকালে এ দেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ইদানীং জাহাজশিল্প নতুনরূপে আশার আলো দেখাতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে নির্মিত পণ্য ও যাত্রীবাহী জাহাজ এখন ডেনমার্ক, জার্মানি পোল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
পরিসংখ্যানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌপথে ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট আমদানি-রপ্তানি ছিল ৪৩.১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৭৩.২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন। বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতায় আমরা জলপথের দীর্ঘমেয়াদী নাব্যতা বৃদ্ধি, নদীবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন, নতুন বন্দর নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোগুলোতে জাহাজ ও যাত্রী ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং সকল নৌযানের দক্ষতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
‘এসব বিবেচনায় নিয়ে, আমরা নেদারল্যান্ডস সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রস্তুত করেছি এবং ইতোমধ্যে এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনার অন্যতম উপাদান হচ্ছে পানি সম্পদের সুষ্ঠু ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
এমএ/