ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

পাটগ্রামে শিক্ষকের থাপ্পড়ে শিক্ষার্থী হাসপাতালে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৮
পাটগ্রামে শিক্ষকের থাপ্পড়ে শিক্ষার্থী হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্কুল শিক্ষার্থী মমিনুল ইসলাম। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: স্কুলপ্যান্ট পরে না যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের থাপ্পড়ে মমিনুল ইসলাম (১৪) নামে এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

শনিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে মমিনুলকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মমিনুল উপজেলার বাউরা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

সে বাউড়া ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের ভ্যানচালক রেজাউল ইসলামের ছেলে।

ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা জানায়, শুক্রবার (১২ অক্টোবর) আকাশ মেঘলা থাকায় পরিষ্কার করে নেড়ে দেওয়া স্কুলশার্টটি শুকালেও প্যান্টটি শুকায় নি। তাই শনিবার স্কুলশার্টের সঙ্গে ভিন্ন রঙের প্যান্ট পরে স্কুলে যায় মমিনুল। বিষয়টি জানতে পেরে মমিনুলকে অফিসকক্ষে ডেকে নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজার রহমান। পরে ভিন্ন রঙের প্যান্ট পরে বিদ্যালয়ে আসার জন্য তাকে চর-থাপ্পড় মারেন প্রধান শিক্ষক। দ্বিতীয় বারে থাপ্পড় মারায় বিদ্যালয় ভবনে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যায় মমিনুল। এতে কপালে আঘাত পেয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। আহত মমিনুলকে উদ্ধার করে প্রথমে বাউরা কমিউনিটি হাসপাতাল পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

মমিনুলের বাবা রেজাউল বাংলানিউজকে জানান, ভ্যান চালিয়ে কোনো রকম তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালান তিনি। কষ্টের সংসারে একটি ড্রেসেই স্কুল করে তার সন্তানরা। শুক্রবার আকাশে রোদ না থাকায় মমিনুলের স্কুলের প্যান্টটি শুকায় নি। তাই স্কুল শার্টের সঙ্গে অন্য রঙের প্যান্ট পড়ে যাওয়ায় ছেলের এ অবস্থা করেছেন প্রধান শিক্ষক  আজিজার রহমান।

না প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ছোট বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ কাম্য নয়। তবে মমিনুল থাপ্পড়ের কারণে দেয়ালে ধাক্কা লেগে কপালে আঘাত পেয়েছে।

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুস সালাম বলেন, আহত শিক্ষার্থী মমিনুলের কপালে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মাথা ও কানে আঘাত পাওয়ায় তাকে এখন পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।  

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজার রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে আসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মুরাদ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের কোনো অবস্থায় মারধর করা যাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল করিম বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে ওই প্রধান শিক্ষককে তিরস্কার করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।