ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত, নামছে তাপমাত্রা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৮
রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত, নামছে তাপমাত্রা শীতবস্ত্র কিনতে ফুটপাতের দোকানে

রাজশাহী: এবার অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মেই এসেছে শীত। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মিলেছে শীতের আমেজ। কিন্তু যে হারে শীত পড়ার কথা ছিল, সেভাবে অনুভূত হয়নি। তবে পৌষের আগেই রাজশাহীতে শীত জেঁকে বসেছে। তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। ভোরে আকাশে হালকা মেঘ ও কুয়াশা থাকায় সকাল থেকেই আজ ঠাণ্ডা পড়ছে।

আজকাল বিকেলের দিকে আকাশে রোদ থাকায় শীত কম অনুভূত হয়। তবে সূর্যাস্তের পর আবারও ঠাণ্ডা বাতাস বইতে শুরু হওয়ায় ঠাণ্ডায় গুটিশুটি হয়ে পড়েছেন পথের ধারে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো।

প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষরা শীতে কাতর হয়ে পড়েছেন এখনই। আর শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে তারা যাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।

তবে শুরুতেই শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ প্রস্তুত হচ্ছে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর। সরকারি এই দফতরটি জানিয়েছে, শীতার্তদের মাঝে এবার প্রায় ৪৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হবে।

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন দফতরের প্রধান সহকারী আবদুল খালেক বলেন, তাদের হাতে এখন ১০ হাজার কম্বল রয়েছে। আরও ৩৭ হাজার ৮০০ কম্বল তারা বরাদ্দ পেয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যে সেগুলোও রাজশাহী চলে আসবে। এ সময়ের মধ্যে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তা শীতার্ত মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।

রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, জেলার ৯ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় ৩৩৩টি করে কম্বল বিতরণ করা হবে। সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডেও বরাদ্দ রয়েছে ৩৩৩ কম্বল। আজকালের মধ্যেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র মাঝে কম্বলগুলো বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, শনিবার সন্ধ্যার পর ছিন্নমূল মানুষগুলোকে পথের ধারে খড়-কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে৷ এরই মধ্যে বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে।  

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুল হক জানান, হঠাৎই ঠাণ্ডা বেড়েছে। তাই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যাজমা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বলেও জানান এই চিকিৎসক।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র বলেন, কয়েক দিন থেকেই তাপমাত্রা নামছে। রাজশাহীতে শুক্রবার (০৭ ডিসেম্বর) সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ৬ ডিসেম্বর ছিল ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে পরিসংখ্যানই বলছে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে।  

জানতে চাইলে দেবল কুমার মৈত্র বলেন, সাধারণত তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু,  ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি ও ৬ এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সেই হিসেবে এখনও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়নি। তবে ১০ দশমিক ৬ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শীত জেঁকে বসেছে একথা বলাই যায়।

এদিকে, আবহাওয়ায়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে এ মাসের প্রথমার্ধে তেমন একটা তাপমাত্রা কমার আশঙ্কা নেই। তবে এসময় শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় ঘন বা মাঝারি কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র মাঝারি বা হালকা ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। প্রথমার্ধে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। কিন্তু মধ্য ডিসেম্বরের পর রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমতে পারে। এ সময় দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৪ ঘণ্টা, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
এসএস/এসআইএস


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।