ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সেতু নির্মাণে ত্রুটি নেই, তবে বিল নিয়ে কারসাজির অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
সেতু নির্মাণে ত্রুটি নেই, তবে বিল নিয়ে কারসাজির অভিযোগ

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর কাটা খালের উপর নির্মিত সেতুর নির্মাণ কাজের কোনো ত্রুটি নেই। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির এমন প্রতিবেদনের পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মো. জহুরুল ইসলাম। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদিত ঠিকাদারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সিরতা কাটা খালের উপর ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে লটারির মাধ্যমে মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ কাজ পায়। এরপর ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি কার্যাদেশ পেয়ে বহু প্রতিকূলতা স্বত্বেও ২০১৭ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

 

কিন্তু নির্মাণের দুই মাস পর আকস্মিক বন্যায় সেতুর নিচে মাটি সরে গিয়ে হেলে পড়ে। তখন সেতু হেলে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নুরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় ‘সেতুর নির্মাণ কাজে কোনো ত্রুটি নেই। মূলত বন্যায় প্রবল স্রোতে মাটি সরে যাওয়ায় সেতু হেলে পড়েছে। ’ 
 
বিষয়টি লিখিতভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে জানান দশম সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের সংসদ সদস্য বেগম রওশন এরশাদ, সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম মো. ওয়ালিদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।  

অভিযোগ উঠেছে, ঘটনার সত্যতা পেয়েও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একটি অসাধু চক্র এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজা ফারুক অসৎ উদ্দেশে কারসাজির মাধ্যমে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল পরিশোধ করছে না।  

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী মো. জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, নিয়ম মেনে কার্যাদেশ অনুযায়ী সরকারি কাজ করেছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখনো আমি বিল পাচ্ছি না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন বা কি কারণে বিল পরিশোধ করছে না তা বোধ্যগম্য নয়।  

ক্ষোভ প্রকাশ করে ঠিকাদার জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্মাণের দুই মাস পর বন্যার কারণে সেতু হেলে পড়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনেও এ ঘটনার সত্যতা রয়েছে। কিন্তু আমার কাজের কোনো ত্রুটি না থাকার পরও বিল নিয়ে টালবাহানার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।  

বিষয়টি নিয়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজা ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, সেতু নির্মাণের পর আমি এই কর্মস্থলে যোগদান করেছি। তবে কেন বা কি কারণে বিল এখনো পরিশোধ হয়নি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।  

এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সেতু হেলে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানের পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।  

কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনের পরও কেন বিল পরিশোধ হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮ 
এমএএএম/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।