সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ ধরার জন্য গ্রাম এবং শহরের শত শত মানুষ আকচা ও চিলারংয়ে অবস্থিত শুক নদীর বুড়ির বাঁধে আসে। নারী, পুরুষ ও শিশুসহ বৃদ্ধরাও রয়েছেন এ দলে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮২ সালে শুকনো মৌসুমে এ এলাকার জমি চাষাবাদের জন্য ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আচকা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর বাঁধ নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি আটকে রাখা হয় ওই এলাকার উঁচু জমি চাষাবাদ করার জন্য। আটকে রাখা পানিতে প্রতি বছরে ঠাকুরগাঁও মৎস্য অধিদপ্তর বিভিন্ন মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।
মাছ শিকারীরা ফিকা জাল, লাফি জাল, কারেন্ট জাল, চটকা জালসহ বিভিন্ন মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে আসে মাছ শিকার করার জন্য আসেন বুড়ির বাঁধে।
বড়গাঁও ইউনিয়ন থেকে আসা মতিউর রহমান বলেন, প্রতিবছর বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার জন্য এ দিনটির অপেক্ষা করি।
রুহিয়া ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে আসা বিপ্লব বলেন, মাছ ধরার জন্য আমরা কয়েকজন ভোরে এসেছি। বুড়ির বাঁধে মাছ ধরতে এসে মনে হচ্ছে যেন এক মিলন মেলা, যেদিকে তাকাই শুধু মানুষ আর মানুষ।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে মাছ ধরতে আসা মানিক বলেন, সকালে মাছ মারতে আসছি সারাদিন মাছ ধরবো, এতে আমার অনেক ভালো লাগে। এখন পর্যন্ত ছোট-বড় সব মিলে ৩/৪ কেজি মাছ ধরেছি।
শনিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া এ মাছ ধরা চলবে রোববার (২০ অক্টোবর) পর্যন্ত।
এদিকে শহরের চাইতে এখানকার মাছের দাম বেশি বলে জানালেন ক্রেতারা।
রুহিয়া থেকে মাছ কিনতে আসা সুমাইয়া বলেন, এখানে টেংরা, গোচি, শিং, টুনা মাছ প্রতি কেজি ৪০০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর শোল ও রুই-কাতল মাছ চাওয়া হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪শ’ টাকা। প্রতি কেজি পুঁটি মাছ ২০০-২৫০ টাকা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন জানান, বর্ষাকালে পানি ধরে রাখার পর কার্তিক মাসের প্রথম দিকে বুড়ির বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়। এতে উজানের পানি কমে যায়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে শত শত মানুষের মিলনমেলা ও মাছ ধরার উৎসব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
এসএইচ