বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকায় বেলুন ফোলানোর একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে যে ক’জন আহত হয়েছেন, তাদেরই একজন হিসেবে ঢামেকে ভর্তি জান্নাত। ওই দুর্ঘটনায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসাধীন জান্নাতের বাড়ি ভোলার ইলিশায়। তিনি রূপনগরের ১২ নম্বর রোডের একটি বস্তিতে স্বামী অটোরিকশাচালক নজরুল ইসলাম ও শিশুসন্তান সুমাইয়াকে (৫) নিয়ে থাকেন।
হাসপাতালে কথা হচ্ছিল জান্নাতের সঙ্গে। তিনি জানান, সারাদিন মানুষের বাসায় কাজ করে রূপনগর ১১ নম্বর রোডের একটি বাজারে যান। সেখান থেকে একটি মুরগি ও পেঁপে কেনেন। বাজার নিয়ে পায়ে হেঁটে বাসায় ফেরার সময় ওই এলাকায় ভ্যানে করে বেলুন বিক্রি করতে দেখেন। সামনে গিয়ে দেখেন বিক্রেতা গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে ফুলিয়ে বেলুন বিক্রি করছেন। সেখানে গিয়ে মেয়ের জন্য বেলুন কিনবেন কি-না চিন্তা করতে থাকেন। এমন সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ।
জান্নাত বলেন, ‘তারপরে আর কিছুই মনে নেই। হাসপাতালে এসে দেখি আমার হাত নেই। ’
কান্নায় ভেঙে পড়ে জান্নাত বিলাপ করতে থাকেন, ‘ভাই গো, আমার হাতটা কই? আমার হাতটা খুঁজে দেন। আমার হাতটা খুঁজে এনে ডাক্তারদের কাছে দেন। তারা আবার জোড়া লাগিয়ে দেবেন। ’
জান্নাতের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার দেবর মনির হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে জানান, জান্নাতের কন্যা সুমাইয়া মিরপুর এলাকার স্থানীয় একটি স্কুলের নার্সারিতে পড়াশোনা করে।
ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘রূপনগরের ঘটনায় আমাদের হাসপাতালে মোট ১৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ১২ জন শিশু। শিশু জনি, অজ্ঞাতপরিচয় আরেক শিশুসহ মোট চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মিরপুর ডেন্টাল হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। ’
জান্নাতের ব্যাপারে ডা. আলাউদ্দিন বলেন, ‘জান্নাত হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন। তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া হাতের অংশটি আমরা পাইনি। ’
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পরপরই হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় জান্নাত রাস্তায় পড়েছিলেন। প্রথমে ধারণা করেছিলাম তিনি বেঁচে নেই। তবে তিনি আহতাবস্থায় এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
এজেডএস/এইচএ/