শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ে বেঙ্গল ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘নগরনামা বসবাসের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান বলেন, দশ বছর আগে কেউ যদি বলতো দেশ আজকের অবস্থানে পৌঁছাবে আমি বিশ্বাস করতাম না।
‘কেবল ঢাকা নয়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রতিটি গ্রাম হবে শহর। তার অর্থ হচ্ছে, শহরের সকল সুবিধা গ্রামে নিতে হবে। তবে গ্রামের রূপকে পরিবর্তন করা যাবে না। তিনি চেয়েছিলেন বলেই হাতিরঝিলের উন্নয়ন হয়েছে। আমরা বিজিএমইএ থেকে ভবনটি রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী রাজী হননি। তিনি জলাধার রক্ষার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কৃষি জমির মধ্যে যাতে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন না হয়, এজন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছেন। ’
প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি উন্নয়ন যা হচ্ছে, তা পরিকল্পিত নয়। ঢাকা শহরেও অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে। লুই আই কানের নকশা অনুযায়ী শের-ই-বাংলা নগরে পাঁচ তলার ওপরে ভবন হওয়ার কথা নয়। কিন্তু হয়েছে। যার বেশির ভাগই সরকারি ভবন। প্রধানমন্ত্রী সেই মূল নকশাকে রিস্টোর করতে বলেছেন।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, উন্নয়ন করতে হবে পরিকল্পনা করে। জলাধার, পার্ক, খাল ভরাট করে উন্নয়ন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা থাকার পরও এসব ভরাট করে সরকারি কাজ হচ্ছে।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, দেশের জন্য কাজ করতে হলে মাটি ও পানি নিয়ে কাজ করতে হবে। ফিজিক্যাল প্ল্যান না থাকলে প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। তাই আমরা বেঙ্গল ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছি।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের পরিচালক কাজী খালেদ আশরাফ, স্থপতি জালাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, শুধু ভবন তৈরি করলেই হয় না। সেগুলো হতে হয় বৈজ্ঞানিকভাবে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি ডেকে আনে। তাই পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করতে হবে। আর কেবল ঢাকার উন্নয়ন করলে হবে না, গ্রাম পর্যায়ে পরিকল্পিত উন্নয়ন করতে হবে। জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে।
নগরনামার পূর্বশর্ত হওয়া উচিত ছিল জলজ পরিকল্পনা। তবে এ মুহূর্তে চারদিকে শুষ্কতার জয়গান। নির্বিচারে জলাভূমি ভরাট করে যেমন তেমন বাড়িঘর বানানো হচ্ছে। একদিকে উন্নয়ন ও প্রগতির ডামাডোল আর অন্যদিকে প্রকৃতির প্রতিনিয়ত বেড়ে চলার স্বভাব। এই দুইয়ের সহাবস্থান খুব উপেক্ষিত। তাই প্রগতি, প্রকৃতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন এই তিনের নতুন মোহনা, জীবন ধারণা ও বসবাসের নতুনত্বর চিন্তা ভাবনা ও রূপকল্পনা বলে মনে করেন বক্তারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্বে অতিথিরা প্রদর্শনীর স্থাপত্য বিষয়ক নকশাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন। সেখানে রাজধানীর গুলশান, বনানী, বুড়িগঙ্গা নদী, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, গাজীপুর, মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানের পরিবেশবান্ধন উন্নয়ন কার্যক্রমের স্থাপত্য নকশা স্থান পেয়েছে। যে নকশাগুলো বাস্তবায়নের জন্যও প্রদর্শনীতে সরকারের প্রতি সুপারিশ রেখেছে বেঙ্গল ইনস্টিটিউট।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৯
ইইউডি/জেআইএম