এতদিন ধরে মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এবং মোটরযান বিধিমালা ১৯৮৪-এর অধীনে সড়ক পরিবহন খাত পরিচালিত হয়ে আসছিল। নতুন আইন অনুসারে সড়কে যেকোনো আইন লঙ্ঘন করলেই এখন মোটা অঙ্কের জরিমানা, কারাদণ্ড এমনকি উভয়দণ্ডও হবে।
এদিকে, আইন কর্যকরের একদিন পর শনিবার (০২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন রুটের পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন সড়ক আইন সম্পর্কে তারা জানেন না। তারা শুধু জানেন জরিমানার অঙ্ক বেড়েছে। তাদের মতে, এ সম্পর্কে জানেন শুধু তাদের নেতারা। বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার সময় তাদের কাছ থেকে টাকা নেন আর তাদের উপস্থিত থাকতে বাধ্য করেন নেতারা। এছাড়া খুব অল্প সংখ্যক শ্রমিক নতুন আইন সম্পর্কে জানেন। যারা আবার এ আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান করছেন।
রাজধানীর গুলিস্তান-ফার্মগেট হয়ে উত্তরাগামী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিবহনের চালক ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নতুন সড়ক আইন হয়েছে এমন কিছু জানি না। শুধু শুনেছিলাম জরিমানার টাকা বাড়ছে। আর এই আইনের কথা মালিকরা না জানালে আমরা জানতেও পারি না। মালিকরা এখন পর্যন্ত কিছু জানাননি। আরেকটা উপায় আছে, সেটা হলো- রাস্তায় পুলিশ যখন মামলা দেবে, তখন জানতে পারব। তবে নতুন সড়ক আইন হলেও সেটা আমাদের কথা চিন্তা করে করা হয়নি। আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতেই করা হয়েছে।
গাজীপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটের অনাবিল পরিবহনের চালক রফিক আলম বাংলানিউজকে বলেন, আইন হয়েছে বিষয়টা তখন জানতে পারব, যখন সমাবেশ কিংবা কোনো প্রোগ্রাম করা হবে। বেশির ভাগ ড্রাইভার পত্রিকা পড়ে না বা টিভিও দেখে না। তাদের জানার কোনো উপায় নেই। নেতারা প্রোগ্রাম করার আগে চাঁদা চাইতে আসবেন আর সেখানে থাকতে বলবেন গাড়ি চালানো বাদ দিয়ে। তখন আমরা নতুন সড়ক আইন সম্পর্কে জানতে পারব। আর না হলে মালিক জানাবেন।
এসময় তিনি এও বলেন, আইনের বেশি চাপাচাপি দেখলে তখন আবার দরকার হলে এই কাজ করব না। শুনেছি আইনানুসারে জরিমানা অনেক বেশি বেড়েছে।
অপরদিকে, হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবহন শ্রমিক জানেন এই নতুন সড়ক আইন সম্পর্কে। মিরপুর থেকে সদরঘাটগামী বিহঙ্গ পরিবহনের চালক রহিম বাংলানিউজকে বলেন, নতুন সড়ক আইন হয়েছে দেখেছি। শাস্তির অর্থ প্রচুর বাড়ানো হয়েছে। এসব আমাদের দাবানোর জন্য করা হয়। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা শুধু আমাদের জন্য হয় না। সেটা সরকার এমনকি আমাদের নেতারাও দেখেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
এমএএম/টিএ