শনিবার (০২ নভেম্বর) দুপুরে মামলাটি করা হয়। সকালে উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের জোয়াড়ী গ্রাম থেকে তসলিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তসলিমা খাতুন জোয়াড়ী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে ও গোপালপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে মনিরুল ইসলামের স্ত্রী। মনিরুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ মডেল থানায় কর্মরত আছেন।
তসলিমার বাবা আবুল কাশেম অভিযোগ করে বাংলানিউজকে জানান, প্রায় এক বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মনিরুল ও তাসলিমার। বিয়ের পর তসলিমাকে নিয়ে কর্মস্থল চাঁপাইনবাবগঞ্জে থাকতেন মনিরুল। বিয়ের সময় কোনো যৌতুক দাবি না করলেও পরে যৌতুকের জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তিনি গরীব মানুষ হওয়ায় টাকা দিতে পারেননি।
এ নিয়ে নির্যাতন শুরু হয় মেয়ে তাসলিমার ওপর। পরে পুলিশ ফান্ড থেকে ঋণ নেওয়ার কথা বলে তাসলিমা ও ছেলে রবিউল করিমের নিকট থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ভুয়া জিডি করে জামাই মনিরুল ইসলাম। এরপর গর্ভবতী তসলিমাকে গত ২৩ আগস্ট ডাক্তার দেখানোর কথা বলে জোর করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শান্তির মোড় এলাকার সেবা ক্লিনিকে গর্ভপাত করানো হয়।
তিনি আরও বলেন, গর্ভপাত করানোর পরে অসুস্থতার কথা বলে তার বাড়িতে রেখে যায় তসলিমাকে। এরপরে কোনো যোগাযোগ করেতেন না মনিরুল। গত ৯ আক্টোবর ছেলে রবিউল করিম গিয়ে মনিরুল ইসলামকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। ১০ অক্টোবর সকালে মনিরুল চলে যান কর্মস্থলে। তখন তাসলিমা নিজ ঘরে অজ্ঞান অবস্থায় ছিলো। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (০১ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে তসলিমা মারা যান।
তসলিমার বড় বোন আরজিনা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, তসলিমাকে মেরে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে মনিরুল।
অভিযুক্ত মনিরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি স্যারের রুমে আছি পরে কথা বলছি। কিন্তু পরে তিনি আর মোবাইল ফোন ধরেননি।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় তসলিমা খাতুনের বাবা আবুল কাশেম বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
এনটি