গত ১ নভেম্বর থেকে নতুন আইন প্রয়োগ হলেও এর তেমন প্রভাব চোখে পড়েনি সড়ক-মহাসড়কে। আগের মতোই চোখে পড়ছে নানা অনিয়ম।
পথচারীদের মতে, আগের চেয়ে কঠোর এই আইন বাস্তবায়নের জন্য আরও বেশি প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। কারণ, সড়ক-মহাসড়কের অনিয়ম বহু বছর ধরে চলে আসছে। এটা রাতারাতি বন্ধ করা সম্ভব নয়। আইনটি টেকসই করতে হলে কর্তৃপক্ষকেই আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নাজমুল হাসান নামে এক পথচারী বলেন, অনেক জায়গায় জেব্রা ক্রসিংয়ের চিহ্ন মুছে গেছে। অনেক জায়গায় ফুটওভার ব্রিজ নেই। আবার কিছু জায়গায় মেট্রোরেলের কাজ চলায় অবস্থা আরও করুণ। তাই সামগ্রিক বাস্তবতায় এই আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে। অবকাঠামোগত ক্রটিগুলো সমাধান করা না হলে সাধারণ মানুষকে আইন মানাতে কষ্ট হবে। আর এটি প্রয়োগের আগে অবশ্যই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে হবে। নাহলে নিরীহ জনগণের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে, আমরাও চাই এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ হোক। কেননা একটি সুন্দর ঢাকা আমাদের সবারই কাম্য।
রাজধানীর কেন্দ্রবিন্দু শাহবাগে ধ্রুব নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন আইন সম্পর্কে শুনেছি। আইনটি কার্যকর করলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কঠোর আইনের প্রয়োগ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়। এজন্য আইনটি সম্পর্কে প্রচারণা বাড়াতে হবে। মানুষ সচেতন হলেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।
সাধারণ মানুষের মতো বিশেষজ্ঞদেরও মতামত প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোয়। এ ব্যাপারে পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, এই আইনের সার্থকতা তখনই হবে, যখন ভয় দেখানোর দরকার হবে না। আইন যুগোপযোগী হয়েছে কি-না সেটা দেখতে হবে। প্রয়োগের আগে একটু প্রচার-প্রচারণার দরকার আছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বলছে, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হলেও আপাতত প্রয়োগ হবে পুরনো আইনই। পর্যায়ক্রমে সহনীয় মাত্রায় নতুন আইনের প্রয়োগ শুরু হবে। তার আগে প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের আইনটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা ও বিশেষ করে যাদের জন্য আইন অর্থাৎ পথচারী, চালক ও হেলপারদের অনুপ্রাণিত করা হবে। তাছাড়া নতুন আইনটির সফল প্রয়োগের ক্ষেত্রে পথচারী, পরিবহন চালক-হেলপারসহ সব অংশীজনের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তবে নতুন আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভালো ধারণা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজধানীর বেশ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্ট। তারা বাংলানিউজকে বলেন, আগে অনেককেই দেখেছি হেলমেট ছাড়া বাইক চালাতে। আজ আর তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। মানুষজন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে নতুন আইন মেনে চলার। আমার মনে হয়, এভাবে চলতে থাকলে ঢাকা শহরের ট্রাফিক সিস্টেমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। কারণ, সাধারণ জনগণ এখন অনেক সচেতন।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এইচএমএস/একে