ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সতীনকে মারধর, সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
সতীনকে মারধর, সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা 

লালমনিরহাট: আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে সতীনকে মারধরের ঘটনায় লালমনিরহাটের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুমা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লালমনিরহাট সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী সুরাইয়া জেসমিন।  

অভিযুক্ত মাসুমা ইয়াসমিন লালমনিরহাট পৌরসভার নামাটারী এলাকার অ্যাডভোকেট মশিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী।

তিনি লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১০ বছর আগে রংপুর শহরের ধাপচিকলী এলাকার পূর্ব-বিবাহিতা সুরাইয়া জেসমিনকে (৩০) দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান। এরই মাঝে তাদের সংসারে ঈশান (৮) নামে এক ছেলের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই কারণে-অকারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন সতীন মাসুমা ইয়াসমিন ও স্বামী মশিউর রহমান। সম্প্রতি এর বিচার চেয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন সুরাইয়া। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সতীন মাসুমা।  

এরই সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ছেলেকে নিয়ে স্বামী মশিউর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লালমনিরহাট জজ আদালত চত্বরের বার কাউন্সিল ভবনে যান সুরাইয়া। সে সময় তাদের দেখে মাসুমা ও তার ভাই ইকবাল হোসেন মামুন (৪৮) সুরাইয়াকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। এতে ছেলে ঈশানসহ গুরুতর আহত হন সুরাইয়া। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মা-ছেলেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।  

পরবর্তীতে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনায় সতীন মাসুমা, তার ভাই মামুন ও স্বামী মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুরাইয়া জেসমিন।

এ ব্যাপারে বাদী সুরাইয়া জেসমিন বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান স্বামী মশিউর রহমান আগের স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে তাকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে প্রথম স্ত্রী মাসুমার চাপে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও পুনরায় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আমাকে বিয়ে করেন মশিউর। আমি বিভিন্ন সময় আমার স্বামীকে ১২ লাখ টাকা ধার দেই। গত বৃহস্পতিবার সেই টাকা টাকা ফেরত নিতে তার কার্যালয়ে গেলে মাসুমা তার ভাইসহ আমাকে বেদম মারধর করেন। তাদের হামলা থেকে আমার ৮ বছরের ছেলে ঈশানও রক্ষা পায়নি। তারা ক্ষমতাসীন দলের আইনজীবী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করে না। বিচার না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো পথ নেই।

এ ব্যাপারে বাদীর স্বামী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করলেও সুরাইয়া জেসমিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই। সন্তানের ভরণপোষণের জন্য তাকে প্রতি মাসে খরচের চারগুণ টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। এরপরও কর্মস্থলে এসে ব্ল্যাকমেইল করা উচিত নয়। ঘটনার সময় আমি এজলাশে ছিলাম।  

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫,  ২০১৯ 
কেএএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।