বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী গৌতম চন্দ্র পাল লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় বিশেষ শাখা বরিশাল সদরের (দক্ষিণ) ২৬ নম্বর ক্রমিকে (26.Babuganj, P.S. Case No-.3, Dt.17.02.72) বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার (হাল থানা-বিমানবন্দর) পূর্ব রহমতপুরের ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন এলাকার মৃত নকুল চন্দ্র পালের ছেলে ও আমার বাবা মৃত বিমল কৃষ্ণ পালের নাম দুরভিসন্ধিমূলক ভাবনার আলোকে অন্যায়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকাশিত হয়।
ছেলে হয়ে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি অনুমান করি যাদের সঙ্গে আমার কোটি কোটি টাকার সম্পাত্তি নিয়ে বিরোধ, মামলা, মোকাদ্দমা চলছে তাদের প্ররোচনায় আমার বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ওই তালিকায়।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার ছেলে গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, কারণ ওই তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা গেলে আমাদের সম্পদ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে, যাহা তাদের অবৈধ দখলদারিত্ব আরও মজবুত করবে।
তিনি বলেন, আমার ঠাকুর দাদা নকুল চন্দ্র পালকে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে নিজ বাড়ির সামনে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে তার মরদেহ পাশের খালে ফেলে দেয়। আমাদের বাড়ির কতিপয় ঘরে অগ্নিসংযোগ করে ও অবশিষ্ট ঘর ভেঙে পাকবাহিনীর গাড়িতে করে বরিশাল নিয়ে যায়। সে সময় আমার বাবা ক্যাডেট কলেজের নিকটবর্তী কালভার্টের ওপর বেইজ কমান্ডার আব্দুল ওহাব খানের উপস্থিতিতে একযাগে আক্রমণ করে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। যা ঘটনার সাক্ষী আমার মা বকুল রানি পাল ও দিদি লীলা রানি দত্তসহ পরিবারের সদস্যরা। এ রুপ হত্যার কারণে যেখানে আমাদের শহীদের পরিবারের মর্যাদা লাভ করার কথা সেখানে উল্টো তার ছেলে (আমার বাবা) বিমল কৃষ্ণ পালের নাম রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং অত্রাঞ্চলের বেইজ কমান্ডার আব্দুল ওহান খানের সার্বক্ষণিক যুদ্ধসহচর। স্বাধীনতাযুদ্ধে চলাকালীন আমাদের সাত সদস্য বিশিষ্ট পরিবার আব্দুল ওহাব খানের ইচ্ছাতেই প্রথমে ছাতিয়ার সৈজদ্দিন হাওলাদারের বাড়ি এবং পরবর্তীতে তারই শ্বশুর লাকুটিয়ার মো. হোসেন দারোগার বাড়িতে অবস্থান করে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমি অস্ট্রেলিয়ায় আছি। সদ্য প্রকাশিত ওই তালিকায় আমার বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত করার কারণে সামাজিকভাবে চরম অপমানিত বোধ করছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। কারণ স্বার্থান্বেষী মহল এটিকে পুঁজি করে আমাদের ওপর কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম শুরু করতে পারে। এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা বাতিল পূর্বক এ সম্মানহানিকর কর্মকাণ্ডের নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এ তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার এবং রাজাকারের প্রকৃত তালিকা প্রস্তুত করে সম্মানিত লোকের সম্মান অটুট রাখা যায় তার সুব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
এমএস/এএটি