ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে কৃষিজমির ওপর কৃষকের অধিকার সম্পৃক্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে কৃষিজমির ওপর কৃষকের অধিকার সম্পৃক্ত

বরিশাল: খাদ্য অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি এবং খাদ্য ও পুষ্টির অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন করেছেন কৃষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), ব্রেড ফর দ্যা ওয়াল্ড এবং প্রান্তজনে’র আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।  

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বরিশাল মানবাধিকার জোটের সভাপতি ডা. সৈয়দ হাবিবুর রহমান, আইসিডির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার জাহিদ, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তপন চক্রবর্তী, ম্যাপের নির্বাহী পরিচালক শুভংকর চক্রবর্তী, ক্যাবের সম্পাদক রণজিৎ দত্ত প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খাদ্য প্রত্যেক মানুষের প্রধানতম অধিকার। মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার পূর্বশর্তই হচ্ছে তার খাদ্যের অধিকার পূরণ করা। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে বিশ্বের ৯২ কোটি মানুষ পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাবে আছে, আর এর ৩৬ শতাংশেরই বসবাস দক্ষিণ এশিয়ায়। অপ্রকাশ্য ক্ষুধা, পুষ্টিহীনতা, খাদ্য অপচয় এবং অনিরাপদ খাদ্য- এসব বিবেচনায় নিলে খাদ্য অনিরাপত্তার প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ।  

বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলা। কিন্তু ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে আমাদের যে সব বাধার মুখোমুখি হতে হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো কৃষিজমির ওপর সাধারণ কৃষকদের অধিকার হারানো, জমি দখল, জমির অপরিকল্পিত ব্যবহার এবং মাথাপিছু কৃষিজমি দ্রুত কমে যাওয়া।  খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে কৃষিজমির ওপর কৃষকদের অধিকার খুব নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকরা যারা খাদ্য চাহিদার সিংহভাগ যোগান দিয়ে থাকে, কিন্তু তাদের বেশির ভাগেরই জমির মালিকানা নেই। সারা বিশ্বে শতকরা ৪০ ভাগ জমি প্রকট স্থায়িত্ত্ব সংকটে রয়েছে। এসব জমির বেশিরভাগই বৃহৎ শিল্প-কারখানা অথবা বিভিন্ন রকম অকৃষিজ কাজে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা আছে। মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ, ক্রমবর্ধমান ও অপরিকল্পিত নগরায়ন, রাষ্ট্রীয় বৃহৎ প্রকল্প, শিল্পের বহুমুখী প্রসার, বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য বাধ নির্মাণ, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ সহ নানাবিধ কারণে আমাদের দেশের অবস্থা আরও শোচনীয়।

বক্তারা আরও বলেন, খাদ্য অধিকার মানেই মানুষের জীবনের অধিকার। সাংবিধানিকভাবে খাদ্য অধিকারের নিশ্চয়তা পাওয়ার অধিকার সব নাগরিকের রয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশের প্রায় চার কোটি মানুষ এখনো দরিদ্র; অর্থাৎ প্রতি চারজনে একজন মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। স্থায়ীভাবে গুণগত ও পরিমাণগত পর্যাপ্ত খাদ্যে এ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর প্রবেশাধিকার নেই। এ চার কোটি দরিদ্র মানুষ প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ২২২১ কিলো-ক্যালরি খাদ্য গ্রহণ করতে পারেনা এবং দৈনিক ১৮০৫ কিলো-ক্যালরি খাদ্য ক্রয় করার সামর্থ্য নেই অতিদরিদ্র প্রায় দু’কোটি মানুষের।  

এসময় বক্তারা বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রাক্কালে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষায় কৃষিজমির সুরক্ষা এবং এ জন্য  বিশেষ আইন প্রণয়নের দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
এমএস/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।