কাজ শেষে অবসর পেলেই তিনি ছুটে যান মানবতার কল্যাণে কাজ করতে। এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকদিনের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় যখন দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিরা শীতে কষ্ট ভোগ করছে তখন নিজ বেতনের জমানো অর্থ দিয়ে সড়কের ধারে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দুস্থদের কম্বল ও আর সোয়েটার হাতে তুলে দেন এই পুলিশ সদস্য।
মেহেদি হাসান দোলন বাংলানিউজকে জানান, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দেই। যোগদানের পর ট্রেনিং শেষ করে প্রথম পোস্টিং নিয়ে চলে আসি বান্দরবান পুুলিশ লাইন রির্জাভ অফিসে। পুলিশে চাকরি পাওয়ার পর দেশসেবা ও মানব সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলেছি। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবার জন্য সবসময় কিছু করার চিন্তা নিয়ে এগোতো থাকি।
তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নিজ উদ্যোগে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ প্রদান, নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিস প্রদানসহ বই-খাতা বিতরণ করেছি। অসহায় নারীদের দিয়েছি সেলাই মেশিন। যাতে সেলাই করে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। বান্দরবানের এক ভিক্ষুককে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে নিজ পাঁয়ে দাড়ানোর জন্য তৈরি করে দিয়েছি ভ্রাম্যমাণ একটি দোকান সঙ্গে কিনে দেই বেশ কিছু মালামাল। শুধু এসব কাজই নয় শীতে কষ্ট পাওয়া গরীব ও অসহায় ব্যক্তিদের শীত নিবারণের জন্য রাতের আঁধারে অলিতে-গলিতে ঘুরে ঘুরে শীতবস্ত্র বিতরণ করছি।
এদিকে পুলিশ সদস্যের এই মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়েছে অনেকেই, আর তার জন্য শুভ কামনা করেছে উপকারভোগীরাই।
ভ্রাম্যমাণ দোকান পাওয়া বান্দরবান সদরের লাঙ্গি পাড়ার বাসিন্দা হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এই পুলিশ সদস্য মেহেদি হাসান দোলন ভাইয়ের জন্য আমি ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দোকান করে আয় উপার্জন করছি। বর্তমানে আমার পরিবার ভালোই চলছে। এক সময় ভিক্ষা করে অনাহারে দিন কাটাতাম। আজ নিজের পায়ে দাঁড়ালাম শুধু দোলন ভাইয়ের জন্য।
বান্দরবান পুুলিশ লাইন রির্জাভ অফিসে কর্মরত পুলিশ সদস্য রিয়াদ ও শাহাদাৎ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মেহেদি হাসান দোলন পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য। তার কার্যক্রমে আমরা উজ্জিবীত হয়। তিনি প্রায় সময়ই বেতনের জমানো অর্থ দিয়ে সেবামূলক কাজ করেন। আর তার এসব কাজ দেখে আমরা উৎসাহ পায়।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, দোলন আমাদের পুলিশের গর্ব। আমরা চাই পুলিশের সকল সদস্য মানব কল্যাণে কাজ করে যাক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯
এনটি