ঢাকা: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া গ্ৰামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী ভাঙনের কবল থেকে বসতবাড়ি ও ৩৩ কেভি জাতীয় গ্রিডের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন টাওয়ার রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে ভুক্তভোগী গ্ৰামবাসী ওই দাবি জানান।
গ্ৰামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তৃতায় মো. জামাল হোসেন বলেন, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলাধীন তেওতা ইউনিয়নের অন্তর্গত আলোকদিয়া গ্ৰামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। ওই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মানিকগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার। ওই এলাকায় সরকারিভাবে কোনো বালু মহাল ইজারা না দেওয়া সত্ত্বেও মেসার্স তাকবীর এন্টারপ্রাইজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রাত-দিন যমুনা নদী থেকে ১২ ইঞ্চি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় আলোকদিয়া গ্রামের অসংখ্য বসতবাড়ি, আবাদি জমি ভাঙনের মুখে পড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তাছাড়া নদীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জাতীয় গ্রিডের ৩৩ হাজার কিলো ভোল্টের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন, যা স্থানীয়ভাবে ‘তারখাম্বা’ নামে পরিচিত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় এসব টাওয়ারের তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই বালু খেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করলেও তাদের টিকিটি স্পর্শ করতে পারছে না। ফলে এলাকাবাসী রাত-দিন আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছেন।
জামাল হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, এছাড়া আমাদের আবাদি জমি, বাড়িঘর, সামাজিক প্রতিষ্ঠান মসজিদ-মাদরাসা এবং চলাচলের রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এসব অসাধু বালু ব্যবসায়ীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিলেও তারা কর্ণপাত করছে না। বরং আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখায় আমাদের সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। তাই এলাকাবাসীর জানমাল হেফাজতের স্বার্থে ও জাতীয় সম্পদ বৈদ্যুতিক তারখাম্বা এবং সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই সরকারের নৌ পরিবহন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
মানববন্ধনের সময় উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী মো. রাজু আহমেদ, মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. মুক্তার হোসেন ও মো. সামসু মিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
ইএসএস/জেএইচ