রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিসিএস কর একাডেমি মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের 'আয়কর আইন ও বিধানাবলী' সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের কর আইন সম্পর্কে দুদক কর্মকর্তাদের সুস্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার।
তিনি বলেন, আয়কর বা যে কোনো করই জনগণের অর্থ। যারা সরকারের এই পাওনা পরিশোধ করেন না। এই পাওনা আসলে জনগণের অর্থ। পরিশোধ না করা আর্থিক আত্মসাতের শামিল বলে অনেকেই মনে করেন। কীভাবে তারা সরকারি পাওনা না দিয়ে, দম্ভভরে সমাজে মাথা উচু করার সাহস পায়। সমাজে চলাচল করে তা আমার বোধগম্য নয়। এই আত্মসাৎ নিয়ন্ত্রণ করা দুদকের আইনি ম্যান্ডেট। দুদক কখনও তার ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করে না, করবেও না। আমরা সবাই একত্রে দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করতে চাই। কীভাবে আয়কর না দিয়ে অবৈধ টাকা ঘরে রাখার সাহস পায়। আয়কর বিভাগের সন্দেহ হলে এসব ক্ষেত্রে সার্চ করতে পারে কি-না তা আমাদের জানা নেই। তবে এটা আইনে থাকা উচিত।
তিনি বলেন, আজ যারা ব্যাংক থেকে জাল-জালিয়াতি করে অবৈধভাবে ঋণ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। কর ফাঁকি দিয়ে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করছেন। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের তাড়া করছি । শান্তিতে তাদের ঘুমাতে দেব না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও খুবই হতাশাজনক। বাংলাদেশের মানুষ ১৬ কোটি। আমরা জেনেছি আয়কর রিটার্ন জমা দেন ২০ লাখ আর আয়কর দেন মাত্র ১২ লাখ। এটা লজ্জার বিষয়। আমার বিশ্বাস যে সব সম্মানিত নাগরিকগণের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই ট্যাক্স রিটার্ন থাকা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। এতে প্রতিটি নাগরিক নিজেকে দেশের মালিক ভাবতে পারবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৈধ/অবৈধভাবে অনেক বিদেশিরা কাজ করছে। তাদের অনেকেই আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন এবং অবৈধভাবে এই অর্থ পাচারও করছেন বলেও প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আয়কর বিভাগ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে এদের চিহ্নিত করে আয়কর আদায় করতে পারে। যারা এভাবে আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে।
তিনি বলেন, করপোরেট কর, আয়কর কিংবা ভ্যাট বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের অঙ্গীকার, সততা ও নিষ্ঠাবোধ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ঘুষ-দুর্নীতির ন্যূনতম আশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন) আরিফা শাহানার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর নীতি) আলমগীর হোসেন, দুদকের মহাপরিচাল (প্রশিক্ষণ ও আইসিটি) একেএম সোহেল, বিসিএস কর একাডেমির মহাপরিচালক লুৎফুল আজিম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
ডিএন/এসএইচ