মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সর্বশেষ স্বাক্ষী বরগুনা সদর থানার (তদন্ত ওসি) মো. হুমায়ূন কবির প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এ সময়ে আদালতে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ নয়জন আসামি উপস্থিত ছিলেন। একই আদালতে ঢাকা সিআইডির আইটি শাখার বিভাগের নাজমুল হোসেন ও জাকির হোসেন ইমন নামের দুজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৭৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এর আগে (৬ নভেম্বর) নিম্ন আদালত থেকে এ মামলার বিচার শুরুর জন্য বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
১ জানুয়ারি নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে আসামি রেখে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মিন্নিকে অভিযুক্ত করে ২৪জনের নামে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
রিফাত হত্যা মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম. মজিবুল হক বাংলানিউজকে জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া সিআইডির আইটি শাখার দুই কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন বাতিল চেয়ে করা আবেদনের তদন্ত প্রতিবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও আসামিপক্ষের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে (২৫) গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে তারা। আশপাশের অনেক লোক সন্ত্রাসীদের এ তাণ্ডব দেখলেও একজন ছাড়া তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেনি কেউ। গুরুতর আহত রিফাত ওইদিনই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা উচ্চ আদালতের আদেশে এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে মারুফ মল্লিক, আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ, মো. নাজমুল হাসান ও রাতুল শিকদার জয় জামিনে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
ওএইচ/