শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কাগমারা, এনায়েতপুর, বেড়াডোমা, দাইন্যা ইউনিয়নের বাইমাইল, বাসারচর, চিলাবাড়ি, বাঘিল ইউনিয়নের ধরেরবাড়ী, দুরিয়াবাড়ি, বানিয়াবাড়ি, কৃষ্ণপুর ও গালা ইউনিয়নের ভাটচান্দা, সদুল্লাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে শিশুদের উদ্যোগে তৈরি শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) থেকেই শিশুরা কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও বড়দের কাছ থেকে শহীদ দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে জেনেছে। তাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার বানিয়েছে তারা।
কাগমারা এলাকার চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদ বাংলানিউজকে বলে, আমাদের গ্রামে শহীদ মিনার নেই। তাই গ্রামের বড়রা টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেও শিশুরা যেতে পারে না। তাই আমরা বন্ধুরা মিলে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়েছি। গত বছরও আমরা শহীদ মিনার বানিয়েছিলাম।
ধরেরবাড়ী গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মানিক বাংলানিউজকে বলে, বৃহস্পতিবার আমরা বন্ধুরা মিলে শহীদ মিনার তৈরি করে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ফুল চেয়ে তোরা বানিয়েছি।
শুক্রবার সকালে সবাই মিলে খালি পায়ে শহীদ মিনারে গিয়ে সেই তোরা দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
একই গ্রামের মোছা. নার্গিস নামের এক নারী অভিভাবক বলেন, শিশুদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে গ্রামে গ্রামে শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
কাগমারা গ্রামের বাসিন্দা মামুন মিয়া বলেন, এই শিশুদের দেশপ্রেম দেখে আমি অভিভূত। শিশুদের তৈরি শহীদ মিনারগুলোতে মিশে রয়েছে আগামী প্রজন্মের দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি ভালোবাসার স্পর্শ।
মো. মনির হোসেন নামে এক শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলের শিশুদের এ ধরনের শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যাচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধা ও গণসঙ্গীত শিল্পী এলেন মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, আগে শুধু শহরেই শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হতো। এখন গ্রামেও শিশুরা শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। এটি ভালো উদ্যোগ। প্রতিটি গ্রামেই শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এতে নতুন প্রজন্ম এ দেশের ইতিহাস জানতে আগ্রহী হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
এসআরএস