রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
পল্লবীর একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ সোহান নামে এক পেশাদার চোরকে গ্রেফতারের বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
পুলিশ জানায়, এ অভিযানে সোহানের বাসা থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড গুলি, তিনশ’ গ্রাম গাঁজা, নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, তিনটি চাকু, একটি খুর, দু’টি স্ক্রু ড্রাইভার, লোহার তৈরি ছয়টি র্যাত, দু’টি রেঞ্জ, পাঁচটি ঘড়ি, ২২টি চাবি, তিনটি মানিব্যাগ, টর্চ লাইট, স্বর্ণালঙ্কার ও বেশ কয়েকটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১০টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোর ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন মানিকদি এলাকার আমিনুল ইসলাম নামে একটি ব্যক্তির বাসার তালা ভেঙে চুরি করে। এ সময় তার বাসা থেকে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, এক জোড়া স্বর্ণের হাতের বালা, দুইটি স্বর্ণের ব্রেসলেট, তিনটি স্বর্ণের গলার চেইন, দু’টি গলার হার, তিন জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, আটটি স্বর্ণের হাতের আংটি চুরি হয়। এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সোহানের যোগসাজশ পায় পুলিশ।
গ্রেফতার সোহানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, সে টিভিতে নিয়মিত ক্রাইম পেট্রোল দেখে চুরির কাজে লিপ্ত হয়। সেখান থেকে মূলত সে চুরির আধুনিক কলা কৌশল শেখে।
সোহান সাধারণত দিনের বেলায় চুরি করতেন। প্রথমে সে বাসার দারোয়ানের গতিবিধি লক্ষ করতেন। এরপর তিনি কৌশলে বাসায় প্রবেশ করে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চুরি করতেন। তবে যেসব বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো নেই সাধারণত ওইসব বাসা ছিল তার টার্গেট।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, তার কাছ থেকে যে বিদেশি পিস্তল পাওয়া গেছে সেটি সাধারণত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া অন্য কারো এ অস্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ নেই। এ অস্ত্র কোথায় পেয়েছে তা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে সোহান জানিয়েছে, এক লোকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সে বিদেশি পিস্তলটি কিনেছে। কেনার পর সে এখনো ওই পিস্তলটি ব্যবহার বা প্রদর্শন করেনি। তবে তার কথা আমরা খতিয়ে দেখছি।
এছাড়া, অস্ত্রটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থা ব্যবহার করতো তা নিশ্চিত হতে সবাইকে জানানো হয়েছে। অথবা কারো অস্ত্র হারানোর ব্যাপারে যোগাযোগ করলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এর বাইরে পিস্তলটি কেউ ভাড়া দিয়েছে অথবা অন্য কেউ সরবরাহ করেছে কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বছর শাহবাগ থানা থেকে একজন এএসআইয়ের বিদেশি পিস্তল খোয়া গেছে, এ প্রসঙ্গে ডিসি বলেন, এটি ডিএমপির কোনো অস্ত্র নয়। অস্ত্রাগারে সিরিয়াল মেলানো হয়েছে। এটি ঢাকার বাইরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
পিএম/এফএম