রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ইতোপূর্বেও ওই শিক্ষক একই ছাত্রকে বেধরক মারধর করার কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করে রেহাই পেয়েছিলেন।
এ ঘটনায় পুরো উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কারণ শরীর চর্চা বিষয়ের ওই শিক্ষক কর্তৃক একের পর এক নানা অঘটন ঘটে চলেছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
আহত ছাত্র আরিফুর রহমান বলে, সকালে স্কুলের অ্যাসেম্বলি চলাকালে শপথ বাক্য পাঠ করার জন্য তিন ছাত্রী এগিয়ে যাওয়ার সময় কে বা কারা টিজ করে। এতে ছাত্রীরা তাৎক্ষণিক শরীর চর্চা (পিটি) স্যার মো. আমিনুর রহমানের কাছে অভিযোগ করে এবং বিচার দাবি করে। এতে স্যার হঠাৎ করে আমাকে অ্যাসেম্বলি লাইন থেকে টেনে এনে তার হাতের বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকেন। এসময় আমার বা হাতের মধ্যমা আঙ্গুলটিতে আঘাত লেগে কেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হতে থাকে। বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানানো হলে তিনি তা গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো লাইনে গিয়ে দাঁড়াতে বলেন। কিন্তু আমার আঙ্গুল থেকে রক্ত ঝড়তে থাকায় বাধ্য হয়ে নিজেই অন্য হাত দিয়ে চেপে ধরে স্কুল থেকে বের হয়ে ওই অবস্থাতেই চার্জার অটো ভ্যানে করে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যাই। সেখানে উপজেলা শিক্ষা অফিসের লোকজন আমাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করান।
আরিফ আরও জানায়, সম্পূর্ণ অকারণেই স্যার আমাকে মেরেছেন। ইতোপূর্বেও তিনি আমাকে ব্যাপকভাবে মারধর করায় স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে তখন সমাধান করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকেই তিনি প্রায়ই আমাকে ক্লাসে অহেতুক বকাঝকা করেন। এমনকি তিনি মাঝে মাঝে আমাকে ক্লাসে দাঁড় করিয়ে বলেন, তুই লেখাপাড়া করে কি করবি। তোকে তো রিকশা চালাতে হবে। তাছাড়া তিনি আমাকে মাদকাসক্ত বলেও তিরস্কার করেন। যা সম্পূর্ণরুপে মানসিক অত্যাচার। এতে আমি প্রতিবাদ করলেই তিনি মারপিট করেন। আজ আমাকে মেরে রক্তাক্ত করলেও তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এছাড়াও পিটি স্যার অনেক অঘটন ঘটিয়েছেন। যা এলাকাবাসী সবাই জানেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আমিনুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ছাত্রটি অ্যাসেম্বলি চলাকালে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এটি সবাই শুনেছে। তাই তাকে মাত্র দুইবার পায়ে হাঁটুর নিচে বেত্রাঘাত করেছি। এতে কোনো প্রকার রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু পরে জানতে পারি সে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বিষয়টি খুবই অপ্রীতিকর এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলেই মনে হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ছাত্রটি অপরাধ করার প্রমাণ মেলায় তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে রক্ত ঝড়ার মত কিছু ঘটেনি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পাশাপাশি ছাত্র কর্তৃক উত্ত্যক্তের শিকার ছাত্রীদের সম্মিলিত অভিযোগও পেয়েছি। বিষয়টি দেখা খতিয়ে হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেহেনা ইয়াসমিন বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পায়নি। তবে অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
আরএ