ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই চলছে উন্নয়ন কাজ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই চলছে উন্নয়ন কাজ!

ধামরাই (ঢাকা): প্রতিদিন সারাদেশে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে কেউ মারা যাচ্ছেন আবার কেউ গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেন নানা পদক্ষেপ। এরই মধ্যে ঢাকার খুব কাছের উপজেলা ধামরাইয়ের একটি সড়কে দেখা গেছে অন্য চিত্র।

গত দুই-তিন মাস ধরে ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড থেকে শরীফবাগ বাজার পর্যন্ত সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক উন্নয়ন কাজ করছেন মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।

সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য দুই কিলোমিটার এই সড়কটি প্রশস্ত করা হলেও সড়কের মাঝখানে থাকা হাই ভোল্টেজ বিদুৎতের খুঁটিগুলো প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয় সড়ক দুর্ঘটনার কথা।

 

মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে সেই সড়কটিতে দেখা গেছে, ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা থেকে শরীফবাগ বাজার পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত করার ফলে ১১ হাজার ভোল্টেজ সম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রায় ৩০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তার মাঝখানে পড়েছে। সড়কটি ধামরাইয়ের প্রধান সড়ক হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানবাহনের চাপ রয়েছে। সড়কের মাঝখানে খুঁটি থাকায় যানজটও তৈরি হচ্ছে মাঝে মধ্যে। এ কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে জানা গেছে স্থানীয়দের কাছে।

আরও দেখা গেছে, সড়কটির নির্মাণ কাজের বক্স-কাটিং শেষে ইটের খোয়া ফেলে সেগুলো রোলার দিয়ে সমান করার (ডব্লিউভিএম) কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু সড়কে ১১ হাজার ভোল্টের তার বহনকারী বিদ্যুতের খুঁটি রয়েই গেছে।

ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, সড়কের ভেতরে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করতে সওজকে ৮০ লাখ টাকার ডিমান্ড নোট দিয়েছে ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিস। কিন্তু সড়ক ও জনপদ কোনো টাকা এখনো জমা দেয়নি।

ব্যটারিচালিত অটোরিকশাচালক লতিফ বলেন, আগে রাস্তা ছোট ছিল। তখন বিদ্যুতের খুঁটি রাস্তার পাশেই ছিল চলাচলে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি কিন্তু এখন রাস্তা বড় করায় বিদ্যুতের খুঁটি একেবারে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে। বিদ্যুতের খুঁটিগুলো তাড়াতাড়ি সরানো প্রয়োজন। না হলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

ধামরাই পৌর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নাদিম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। তবে বিদ্যুতের পিলারগুলো এখনই সরানো উচিত। সব কাজের আগে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। এই সড়কে যা হচ্ছে তা হলো পরিকল্পনাবিহীন কাজ। কাজ শেষে একদিকে সওজ দায় এড়িয়ে যাবে, অন্যদিকে নানা অজুহাত তৈরি করবে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে খুঁটি রয়েই যাবে। এতে দুর্ঘটনার মাধ্যমে প্রাণহানির আশঙ্কা যেমন থাকবে তেমনি সড়ক প্রশস্তকরণের কোনো সুফল আসবে না।

ধামরাই সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বলেন, সড়কের প্রায় অর্ধেক জুড়ে বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। খুঁটিগুলো রেখেই সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ চলছে। ফলে যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খুঁটিগুলো দ্রুত অপসারণ করা প্রয়োজন।

ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম খালিদ মো. সালাউদ্দিন জোয়ার্দার বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য ডিমান্ড নোটে উল্লেখিত টাকা একটু কমানোর জন্য বললেও পরবর্তীকালে আমাদের দেওয়া কাজের স্টিমেট দেখে তারা রাজি হয়েছে। সর্বশেষ যেটুকু জানি সেটি এখন মন্ত্রণালয়ে বাজেটের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের কাজ চলমান। বিদ্যুতের খুঁটি সড়ক থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা প্রাক্কলন ব্যয় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে এলে টাকা জমা দেওয়া হবে। তবে কিছুদিন সময় লাগবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।