জান্নাতুল বারবার বলছিলেন রুশদি কই তাকে নিয়ে আসো। আমি একবার রুশদিকে দেখতে চাই।
রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের দিলু রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিল রুশদি (৪)। এ ঘটনায় তার মা জান্নাতুল ও বাবা শহিদুল কিরমানী দগ্ধ হয়ে ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। পরে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
রোববার (১ মার্চ) সকালে জান্নাতুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান।
জান্নাতুলের ননদ শেখ রেশমা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ভাবি ও ভাইকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে ছুটে আসি। সেখানে দেখতে পাই ভাবি ও ভাই যন্ত্রনায় ছটফট করছেন। শ্বাসকষ্ট অবস্থায় ভাবি বারবার বলছিলেন রুশদি কোথায়? তাকে আমি একটু দেখতে চাই। তাকে বলা হয়নি যে অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে রুশদি।
তিনি বলেন, ভাবিকে সান্ত্বনা দিলে বললাম রুশদি ভালো আছে। চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে আসতে দেবে না। এখানে এলে রুশদির ক্ষতি হবে। এর উত্তরে ভাবি অনেক কষ্ট করে বলছিলেন, তাহলে আমাকে নিয়ে চলো আমার সন্তানের কাছে।
দুই চোখ মুছতে মুছতে রেশমা আরও বলেন, আমার ভাবির ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তিনি একেবারেই চলে গেলেন রুশদির কাছে।
জান্নাতুল রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। হাসপাতালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে জান্নাতুলের মরদেহ কর্মস্থলে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে তার মরদেহ নরসিংদীর মনোহরদীতে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে তার সন্তান রুশদির পাশেই তাকে দাফন করা হবে বলেও জানান রেশমা।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে রেশমা বলেন, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে জান্নাতুলের স্বামী শহিদুলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের দিলু রোডের একটি পাঁচতলা ভবনের গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জান্নাতুলের চার বছরের সন্তান রুশদিসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২০
এজেডএস/আরআইএস/