প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাকে মারধর করে ওই ফাঁড়ির দুই উপ পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান ও আশরাফ। জাবেদের শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন ওই দুই এসআই জাবেদকে চড়থাপ্পর দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
বুধবার (০৪ মার্চ) দুপুরে শহরের পুরাতন কারাগারাস্থ ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে ফোনে জাবেদকে ডেকে নেন ওই দুই এসআই। এরপর ফাঁড়ির ভেতরের একটি কক্ষে আটকে (এসআই) মজিবুর রহমান ও আশরাফ তাকে লাঠিপেটা ও লাথি মারতে থাকেন। তাদের সঙ্গে মুক্তা নামে এক তরুণীও তাকে মারধর করে।
তবে এসআই মজিবুর রহমানের দাবি এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার জাবেদ জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কালিকচ্ছ গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি শহরতলীর ঘাটুরায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করেন।
জাবেদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, শহরের তিতাস পাড়ার মুক্তা নামে এক নারী প্রায় সময় আমাকে উত্ত্যক্ত করতো। বাড়ি থেকে বের হলেই আমার পথরোধ করে টাকা চাইতো। বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিত। হামলা-মামলার ভয়ও দেখাত। নানাভাবে ব্লেকমেইল করে মুক্তা আমার কাছ থেকে অনেকবার টাকা নিয়েছে। বুধবার দুপুরে মেড্ডা শশ্মান ঘাটের সামনে তাকে দেখে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে আরও কয়েকজনকে নিয়ে মারধর করে চলে যায়। এরপর পুলিশ দিয়ে ফোন করে আমাকে ফাঁড়িতে ডেকে আনে। পরে পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এসআই মজিবুর ও আশরাফ আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। নিচে ফেলে লাথি মারতে থাকে।
পরে পুলিশের সামনে মুক্তা ও তার বোন আমাকে মারধর করে। অবশেষে আমাকে হুমকি দিয়ে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেই। পরে আমি সদর থানার ওসি স্যারকে বিষয়টি অবহিত করি। আমি এসআই মজিবুর ও আশরাফ এবং মুক্তার বিচার চাই।
জাবেদের মা সখিনা বেগম বাংলানিউজকে জানান, অনেক আগে মুক্তার পরিবার জাবেদের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় প্রায় সময় আমার ছেলেকে সে গুণ্ডা নিয়ে মারধর করতো। ২০/৪০ হাজার টাকা দিতে বলতো। বুধবার সে পুলিশ নিয়ে আমার পুতেরে মারধর করছে। এসময় তার ফোন বন্ধ করে রাখে। এর আগের দিনও আমার ছেলেকে মারধর করে সে।
১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সে ওই মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। এই বিষয়ে ওসি সাহেবের কাছে সে অভিযোগ দেয়। তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন মজিবুর। জাবেদের অভিযোগ পেয়ে ওসি সাহেব তাদের ডেকেছিল বলে জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ওই দুই দারোগাকে ডেকেছিলাম। তারা চড় থাপ্পর দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। আমি তাদের বলেছি তোমরা সালিশ করবার কে। মারধোর করা তোমাদের ঠিক হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২০
আরএ