ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অহেতুক মাস্ক পরার কোনো দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২০
অহেতুক মাস্ক পরার কোনো দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: করোনা ভাইরাস আতঙ্কে অহেতুক মাস্ক পরে বসে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ এবং যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই এ বিষয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে ঘরের মধ্যে মাস্ক পরে বসে থাকার দরকার নেই।


সোমবার (০৯ মার্চ) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন।  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নাই। মাস্ক আর স্যানিটাইজার কেনার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে, যে যা পারছে এক গাদা করে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়। এগুলো করার কোনো দরকার নেই। শুধু যাদের সর্দি কাশি হবে তাদের মাস্ক দরকার হবে।

তিনি বলেন, অযথা মাস্ক কিনে জমা করে রাখা, স্যানিটাইজার কিনে জমা করে রাখা- কিছু হলেই জমা করে রাখা এগুলো একদমই প্রয়োজন নাই। এগুলো একদম কোনো কাজেই লাগবে না পরে হয় ফেলে দিতে হবে নয়তো বেঁচে দিতে হবে।


ঘরে বাইরে মাস্ক পরা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাস্ক পরে ঘুরাফেরারও কোনো দরকার নাই। যদি কেউ সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয় তাহলে সেটা পরে থাকার দরকার। আর এটা এই কারণে যে, তার দ্বারা যেন অন্য কেউ সংক্রামিত না হয়। সেজন্য সাবধান থাকা ভালো।  


দেশের মানুষকে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। খুব বেশি জনসমাগম হয় সেখানে না যাওয়া- সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

হাঁচি-কাশিতে রুমাল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, হাঁচি-কাশি দিতে গেলে রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। কাপড় দিয়েও রুমাল তৈরি করা যায়। এসব ব্যবহারের পর যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। ময়লা রাখার আলাদা ব্যাগ বা বিন রাখা উচিত।


হাত ধোয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বাইরে গেলে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথভাবে হাত ধুয়ে ফেলা। খাবার মুখে দেবার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে দিতে হবে।


বেশি বেশি পানি ও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।


সর্দি-কাশি হলেই করোনা হয়েছে এই ভেবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনুরোধ করব, কারো যদি এতোটুক সন্দেহ হয় যে এরকম ভাইরাস দেখা দিচ্ছে তাহলেই ডাক্তারের কাছে ছুটাছুটি করা, অহেতুক ছুটাছুটি করে ডাক্তারকে ব্যতি ব্যস্ত করার কোনো যৌক্তিকতা নাই।


সর্দি-কাশি হলেই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে এমনিতেই সাধারণ সর্দি-কাশি হতে পারে। সর্দি কাশি- ঋতু বদলানোর সময়, শীত থেকে গরমের দিকে যাচ্ছে এ সময় তো এমনিতেই সর্দি কাশি হয়। স্বাভাবিক সর্দি কাশিতে ভয় পাবার কিছু নেই।


করোনা ভাইরাস সংক্রামণ মোকাবেলায় রাজধানীতে তিনটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং প্রতিটি হাসপাতালে কয়েকটি বেড আলাদা করে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
 

রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য বিমানবন্দরসহ দেশে প্রবেশের সকল বন্দরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।


যেসব দেশে ভাইরাস দেখা দিয়েছে সেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে আসার অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।  


করোনা আক্রান্ত হলেই মারা যাবে এই আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০৪ টি দেশে  ১ লাখ ৫ হাজার ৫৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে মারা গেছে ৩ হাজার ৫৪৬ জন। ৬০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এখানে মৃত্যুর হারও আসলে দেখা যাচ্ছে প্রাণঘাতী একটা রোগ বা মৃত্যু যে অবধারিত সেটা না। চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া যায়। ...দুশ্চিন্তার দরকার নাই।

‘গতকাল (রোববার) ইতালি ফেরত দুজন এবং তাদের এক স্বজন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন বলে শনাক্ত করা হয়। এরপর আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের আলাদা করেছি ও সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।  

সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২০/আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা
এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।