তবে আতঙ্ক কাটছে না বিশ্বের অন্য দেশে। বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
এবার করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ফুটপাতের খাবার দোকানগুলোতে। এক-তৃতীয়াংশ কমেছে চায়ের চাহিদা। অর্ধেকে নেমে এসেছে সিগারেট বিক্রি। ফুটপাতের হোটেলগুলোতেও তেমন দেখা মিলছে না ক্রেতার। দোকানিরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে কমেছে বেচা-কেনা। আর পথচারীরা বলছেন, ভাগ্যের ওপর সব ছেড়ে না দিয়ে সচেতন হচ্ছেন সবাই, এটা ভালো দিক।
বুধবার (১১ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচার রাজস্বভবন এলাকায় ফুটপাতে চা-সিগারেট বিক্রি করেন শফিকুল ইসলাম। গত তিনদিন ধরে তার বেচা-কেনা অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। এখন অনেকটাই অলস সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে তাকে।
শফিকুল বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ কাপ চা বিক্রি হতো। কিন্তু জনমনে করোনা আতঙ্ক তৈরি হবার পর থেকে এখন ১০০ কাপও বিক্রি হচ্ছে না। আবার সিগারেট বিক্রি কমেছে অর্ধেকের কম। দিনে তার চার জার (পানির বিশেষ বোতল) পানি বিক্রি হলেও এখন দুই জারেই দিন চলে যায়।
একই কথা জানান পুরানা পল্টন এলাকার চা বিক্রেতা হাসিব। তিনি বলেন, এর আগে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন বাদে প্রতিদিনই তিনজন করে কর্মচারী চা বিক্রির কাজে সহযোগিতা করতো। এখন বিক্রি নেই, একাই ক্রেতাদের সামাল দিতে পারি। কর্মচারীর বেতন দিতে হবে, বাসাভাড়া আছে, এভাবে বিক্রি হলে সব চিত্র উল্টে যাবে।
চা-সিগারেটের পাশাপাশি কমেছে ফুটপাতের খাবার দোকানের বিক্রি। প্রেসক্লাব-সচিবালয় সংলগ্ন রাস্তার পাশে দুপুরের খাবার বিক্রেতা আজম বলেন, অোমার দোকানে শুধু দুপুরের খাবার বিক্রি হয়। এর আগে দুপুর ১টার পর থেকেই ক্রেতার ভিড় লক্ষ করা যেতো। এখন ক্রেতা নেই বললেই চলে। এভাবে কয়দিন চলবে জানি না। তবে এমনটা চললে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।
তবে করোনার সঙ্গে জনমনে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, এটাকে ভালোভাবেই নিচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন মানুষ। সচিবালয়ে কর্মরত ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে আমরা ফুটপাতে খাওয়া-দাওয়া করেছি, এখন বাসা থেকেই খাবার আনছি। সবাই মাস্ক ব্যবহার করছে, ফুটপাত এড়িয়ে চলছে, এটা ভালো দিক বলা যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে দুপুরে গুলিস্তানে খাবার খেয়েছি। এরপর বাসায় (আজিমপুর) ফিরেছি। তবে এখন আর ফুটপাত বা কোনো হোটেলে খাবার খেতে ইচ্ছে করছে না। পরিবেশ ভালো হলে তখন দেখবো। তবে ফুটপাতে অনেকটাই অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি চলে, এজন্যও অনেকে এড়িয়ে চলছেন এসব খাবার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
ইএআর/এফএম