গত ৮-১০ মার্চ রাষ্ট্রদূত মিলার চট্টগ্রাম সফর করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় স্পেশাল অপারেশন্স এক্সচেঞ্জ প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানেও অংশ নেন যার লক্ষ্য ছিল সংশ্লিষ্ট তিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বাড়ানো।
বুধবার (১১ মার্চ) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পরদিন, ৯ মার্চ রাষ্ট্রদূত মিলার চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে (সিআইইউ) যান। এ সময় রাষ্ট্রদূত মিলার সিআইইউর উপাচার্য ড. মাহফুজুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ দেখা করেন। এ সময় তারা আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে আমেরিকান কর্নারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ৪০ জন নারী শিক্ষার্থী, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এক্সচেঞ্জ শিক্ষার্থী, গার্লস ক্লাব সদস্য, শিক্ষকরা ও নারী অধিকার কর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত মিলার জাতিসংঘের নারী দিবসের এ বছরের মূল ভাব ‘আমি প্রজন্মের সমতা: নারী অধিকারের প্রতি সচেতনতা?’ এর ওপর বক্তব্য দেন।
তিনি বৈষম্য, কুসংস্কার ও অসাম্যমুক্ত বিশ্বকে এগিয়ে নিতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের ওপর বক্তব্য দেন। এ সব লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত চার জন বাংলাদেশিসহ বিশ্বব্যাপী যে ১৩০ জনের বেশি সাহসী নারীকে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে তা তুলে ধরেন মিলার।
রাষ্ট্রদূত মিলার এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) ও পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করেন। রাষ্ট্রদূত ছাত্র প্রতিনিধি এবং অন্যান্য ছাত্রনেতাদের মধ্যাহ্নভোজ করেন। এইউডব্লিউতে বর্তমানে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যসহ ১৯টি দেশের প্রায় ৯০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে যারা পড়াশোনায়, পড়াশোনার বাইরে ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের সম্ভাবনায় উজ্জ্বল ।
রাষ্ট্রদূত মিলার আমিন কলোনিতে ২৫ জন স্থানীয় নারী ও তাদের শিশুদের সঙ্গে ‘উজ্জীবন’ আয়োজিত একটি কমিউনিটি স্ক্রিনিং অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। ইউএসএআইডির সহায়তায় ‘উজ্জীবন’ স্থানীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে উচ্চমানের মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পুষ্টি ও টিবি মোকাবিলার সেবা দিয়ে থাকে। ‘উজ্জীবন’ এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তাগুলো পৌঁছে দিতে কমিউনিটি স্ক্রিনিং সেশনের আয়োজন করে। নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমের সেবা পাওয়ার সুযোগ নেই এমন গ্রামীণ ও অসহায় জনগোষ্ঠীই এ কর্মসূচির লক্ষ্য।
১০ মার্চ রাষ্ট্রদূত মিলার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবালের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম ত্রিপক্ষীয় ‘স্পেশাল অপারেশন্স এক্সচেঞ্জ’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য অতি প্রয়োজনীয় এ এক্সচেঞ্জটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশি সামরিক সহযোগীদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন করে ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে এগিয়ে নেয়। এ এক্সচেঞ্জ একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিন দেশের অঙ্গীকারেরও প্রমাণ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদূত মিলারের সফর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা, সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়াকে এগিয়ে নিতে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অনেকগুলো উদ্যোগের মধ্যে একটি শক্তিশালী অংশীদারত্বকে উৎসাহিত করে এবং একটি স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
টিআর/আরআইএস/