ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

করোনা দুর্যোগেও ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বেআইনি

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২০
করোনা দুর্যোগেও ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বেআইনি

ঢাকা: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান যখন করোনা ভাইরাসের সর্বগ্রাসী আক্রমণ থেকে বাঁচতে লড়াই চালাচ্ছে, সেই মুহূর্তে দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অমানবিক ও বেআইনী। এ নিষেধাজ্ঞা জাতিসংঘ সনদ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধিবিধানের পরিপন্থী বলে জানিয়েছে তেহরান। 

বুধবার (১৮ মার্চ) ঢাকার ইরান দূতাবাস থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ইরানব্যাপী এর বিস্তার রোধের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছেম তেমনি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করার জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

‘যুক্তরাষ্ট্র সব আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি অমান্য করে অন্য দেশের ওপর চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে ব্যবহার করছে এবং এর মাধ্যমে ইরানের জনগণকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। বিশ্বায়নের এই যুগে প্রকৃতপক্ষে আমরা সবাই এক নৌকার যাত্রী। কোনো কারণে এই নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সবার জীবনই ঝুঁকির মধ্যেপড়বে। ’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সবসময় বলে আসছে যে, খাদ্য ও ওষুধসামগ্রী নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। কিন্তু, তারা আর্থিক লেনদেনের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে এবং নিয়মিতভাবে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুমকি দিয়ে ইরানে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। এ অবস্থা ইরানের স্বাস্থ্যখাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। প্রকৃতপক্ষে ইরানের জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো কাজ নেই, যা করছে না। এমনকি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে যখন ইরানের জনগণ কষ্ট পাচ্ছে, তখনও যুক্তরাষ্ট্র তার কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।

‘করোনা ভাইরাস কোনো সীমানা চেনে না। জাতি, ধর্ম, দল-মত নির্বিশেষে যে কেউ এর দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। সুতরাং, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত ও গঠনমূলক পদক্ষেপ প্রয়োজন, এর পাশাপাশি করোনার বিস্তার রোধ করার জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক লেনদেনসহ সব সামাজিক কর্মকাণ্ডের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এ জন্য বিশেষ তহবিল গঠনে দরকার অন্তত কয়েক বিলিয়ন ডলার। এমন এক দুঃসময়ের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত অন্যায় নিষেধাজ্ঞা ও দেশটির অপতৎপরতার কারণে ইরান বড় প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। ’


ইরান জানায়, এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা বহির্ভূত মানবিক পণ্য, যেমন খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানি করার দায়িত্ব এককভাবে ইরানের বেসরকারি খাতের পক্ষে পালন করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। সবাইকে এটা পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, করোনা মহামারি মোকাবিলার কাজে সহায়তার জন্য ইরানের জনগণের ওপর অন্যায়ভাবে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অচল করে দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো প্রত্যেক দেশের সরকার, নাগরিক সমাজ ও মানবতাবাদী ব্যক্তি ও সংগঠনের কর্তব্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২০
টিআর/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।