তা স্বত্ত্বেও শুক্রবার (২০ মার্চ) ছুটির দিনে মহানগরীর কোল ঘেষা ভৈরব নদের ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এলাকায় পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভিড় জমিয়েছে অতি উৎসাহী কিছু লোক।
সারাদেশের মানুষ যখন করোনার আতঙ্কে ভীত-সন্তস্ত্র, ঠিক সেই মুহূর্তে সরকারি নির্দেশনা আমলে না নিয়ে হাজারও মানুষ শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় সময় কাটিয়েছেন।
বেড়াতে আসা কেউ নদীর পাড়ে বসে আড্ডা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ ভৈরবের বুকে বেড়ানোর জন্য নৌকায় উঠে পড়েছেন। ভৈরবের পাড়ে তীরে প্রতিরক্ষা ব্লক বসানো, ফুটপাতে টাইলস বসানো, দর্শনার্থীদের বসার জন্য ছাতা, নদীর তীরে তিনটি গ্যালারি, লাইটিং ও পাবলিক টয়লেট থাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে আড্ডা দিতে দেখা গেছে অনেককে।
আগন্তুকরা জানিয়েছেন, একটু প্রশান্তির জন্য নির্মল বাতাস শরীরে লাগাতে তারা ভৈরবের পাড়ে এসেছেন।
সচেতন মহল বলছেন, করোনা ভাইরাসকে অতি হালকাভাবেই নিয়েছে অনেকেই। সারা বিশ্ব কাঁপছে করোনা আতঙ্কে, খুলনা সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু খুলনার অতি উৎসাহী কিছু মানুষ এটাকে খুব হালকা করে দেখছে। পার্ক বন্ধ তো কি হয়েছে, ভৈরব নদের পাড় তো রয়েছে। ঘরের বাইরে তো যেতেই হবে। ব্যাপারটা এমনই তাদের কাছে।
খুলনা সিটি করপোরেশ (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মহানগরীর কোল ঘেষে ভৈরব নদের ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এলাকা এখন দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র। জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভৈরবের তীর ঘেঁষে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। ২০১৬ সালের ৬ জুন সড়কটি উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া ভৈরব নদের ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এলাকা নতুন করে সাজায় খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। ভৈরবের পাড়ে তীরে প্রতিরক্ষা ব্লক বসানো, ফুটপাতে টাইলস বসানো, দর্শনার্থীদের বসার জন্য ছাতা, নদীর তীরে তিনটি গ্যালারি, লাইটিং ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে।
বৈদ্যুতিক আলোসহ সব সুযোগ সুবিধা থাকায় করোনার আতঙ্ক উপেক্ষা করে ঘাট এলাকায় মানুষের এমন সমাগম ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনা শাখার সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশের নজরদারির অভাব। প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এভাবে মানুষ গণজমায়েত হচ্ছে। করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় সচেতনতার কোনোও বিকল্প নেই।
তিনজনের বেশি একসাথে যেখানে হওয়া নিষেধ সেখানে কিভাবে এত লোক একত্র হচ্ছে এমন প্রশ্ন তুলেন তিনি।
এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি জানা নেই। এখনই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২০
এমআরএম/এবি