তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস না কি জানি একটা আইছে, হ্যার জন্য টার্মিনাল এখন ফাঁকা। প্রতিদিনই যাত্রীও কমছে।
শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে এ দৃশ্য চোখে পড়ে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে। প্রতিটি পরিবহনই যাত্রী সংকটে পড়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় ফিরে আসা বাসগুলোতে যাত্রী পাওয়াটাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
করোনা আতঙ্ক সত্ত্বেও যেসব যাত্রীরা দূরপাল্লায় যাত্রা করছেন এ অবস্থায় তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থাও করেছে পরিবহন সংস্থাগুলো। সেসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে শনিবার থেকে টার্মিনালে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এসআর পরিবহনের মাস্টার আমির হোসেন বলেন, যাত্রীর আগের চেয়ে কম। তবে একেবারেই নেই তা নয়। তবে আমাদের বাস যখন রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া থেকে ফিরছে, তখন একেবারেই খালি আসছে।
যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা গাড়ি প্রতি ট্রিপ শেষে পরিষ্কার করছি। সেসঙ্গে প্রত্যেক যাত্রীকে বাসে উঠার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করানো হচ্ছে।
এনা ট্রান্সপোর্টের সহকারি মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) কাজী মনির বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে যখন গাড়িগুলো ছাড়ছে, তখন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। তবে ঢাকার ফেরার পথে যাত্রীর সংখ্যা কম। অনেকেই আতঙ্কের কারণে ঢাকায় ফিরে আসছেন না। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের বাসের সংখ্যা কমানো হয়নি। শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশনার কারণে কক্সবাজারের বাসগুলো চ্ট্টগ্রাম পর্যন্ত যাচ্ছে।
যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন বাসগুলো স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে ফেলানো হচ্ছে। সেসঙ্গে সিটকভারগুলো খুলে ফেলে সিটগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে। আর যাত্রীদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার তো রয়েছেই। শুধু ঢাকায় নয়, যেখানেই এনা ট্রান্সপোর্টের কাউন্টার রয়েছে, সেখানেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুরে অলস সময় পার করতে দেখা গেলো একতা পরিবহনের মাস্টার খলিলুর রহমান স্বপনকে।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করি আমরা। এখন রাজশাহী অঞ্চল থেকে বাস চলাচল বন্ধ। তবে যেসব স্টাফ ওই অঞ্চলের তাদের জন্য প্রতিদিনই বাস ছাড়া হচ্ছে। তবে সে বাসগুলো ফিরে আসছে না। এর মধ্যে যদি কিছু যাত্রী যদি পাওয়া যায়, তাহলে নিয়ে যাচ্ছি।
দুপুর দেড়টায় হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য এনা ট্রান্সপোর্টের টিকিট কেটেছেন উজ্জ্বল রায়। জরুরি চিকিৎসার কারণে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।
বললেন, আমার পরিবারের সবাই এখন উদ্বিগ্ন আমাকে নিয়ে। তারা বারবার বলছে, দ্রুত চলে আসছে। সেজন্যই এই আতঙ্কের মধ্যে রওনা হলাম।
তিনি বলেন, বাসের মধ্যে পর্যাপ্ত স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা থাকবে কি থাকবে না- সেটা কিন্তু জানি না। তবে সবচেয়ে বড় হুমকির বিষয়, এই বাসটি এয়ারপোর্টে থামবে। সেখানে যদি বিদেশফেরত যাত্রীরা উঠেন, তাহলে আমাদের ভয় থেকে যাচ্ছে। এখন ঈশ্বরের নামে যাত্রা শুরু করলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২০
ডিএন/এএটি