যদিও বিদেশফেরতদের সবাইকে দেশে ফেরার পরপরই অন্তত ১৪ দিন বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইডিসিআর)। অবশ্য এ নির্দেশনা আসার আগে অনেকে ফিরেছেন দেশের মাটিতে।
এদিকে, সিলেটে প্রতিদিনই বিদেশফেরতদের নতুন করে নেওয়া হচ্ছে কোয়ারেন্টিনে। শনিবারও (২১ মার্চ, গত ২৪ ঘণ্টায়) নতুন করে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে ২২৭ জনকে। এরমধ্যে সিলেটে ৬৪, সুনামগঞ্জে ৪৬, হবিগঞ্জে ৯১ ও মৌলভীবাজারে ২৬ জন।
এ নিয়ে বিভাগজুড়ে কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৪৪ জনে। এরমধ্যে সিলেটে ৭৪৮, সুনামগঞ্জে ১৩১, হবিগঞ্জে ২১৬ ও মৌলভীবাজারে ৩৪৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বিদেশ থেকে সিলেটে ফিরেছেন ৯৪ জন। এরমধ্যে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার থেকে ফিরেছেন ৫৬ জন। তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ফিরেছেন ২৩ জন। আর সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফিরেছেন ১৫ জন।
তিনি বলেন, আমাদের হিসাব অনুসারে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেট বিভাগে বিদেশ থেকে ফিরেছেন ২৬ হাজার ৫৯৭ জন। এরমধ্যে ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে ১৯ হাজার ৪৫৬, তামাবিল হয়ে তিন হাজার ৮৯৭, সুতারকান্দি হয়ে ৭৩৭, জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে এক হাজার ১২৮, চুনারুঘাট বাল্লা শুল্ক স্টেশন দিয়ে ২২০ জন, মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার ফুলতলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে ১৮৯ এবং কুলাউড়া উপজেলার চাতলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে ৯৮০ জন দেশে ফিরেছেন।
এসব প্রবাসীর বেশির ভাগই কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কোয়ারেন্টিন না মানায় শনিবার বিকেলে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে এক প্রবাসীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্যের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করেন। এসময় অন্য বিদেশিদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বানও জানান ইউএনও।
এদিকে, দেশে এ পর্যন্ত যতজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই বিদেশফেরত। এছাড়া বাকি যারা আছেন, তারা বিদেশফেরতদের সংস্পর্শে আসার কারণেই আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আইডিসিআর।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিসবাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার জেলা প্রশাসনের ৭টি টিম কোয়ারেন্টিতে থাকা লোকজনের খোঁজ নিতে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে যান। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আলাদা একটি টিম বের হয়। এদিন তারা ৮৭ জনকে দেখতে গিয়ে মাত্র ৫২ জনকে পেয়েছেন এবং ৩৫ জনকে পাননি। যাদের পাওয়া যায়নি, তাদের মধ্যে ৫ জন বিদেশ ফিরে গেছেন। তবে সবাইকে শেষবারের মতো সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। রোববার থেকে অভিযানিক দল কোয়ারেন্টিন না মানাদের জরিমানা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২০
এনইউ/টিএ/এমকেআর