মুখে অসহায়ের ছাপ রেখে রোববার (২২ মার্চ) দুপুরের দিকে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর মিরপুর থেকে আশুলিয়ায় চলাচলরত আলিফ নামে যাত্রীবাহী বাসের চালক আব্দুর রহিম।
আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, তারা তিনজন মানুষ ওই গাড়িতে সারাদিন পরিশ্রম করেন।
তিনি বাংলানিউজকে আরও বলেন, সড়কে লোকজন নেই। অন্য সাধারণ দিনে লোকাল বাসে মানুষকে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। কিন্তু গত দু’দিন থেকে যাত্রী নাই। বাসের আসন আছে ৪৫টি, দুই একটা বাদে প্রায় সব আসন ফাঁকা নিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে রাতে বাস চলাচল নিষেধ করে দিয়েছে। আমাদের সড়কও কবে যেন বন্ধ করে দেয়।
কন্ডাক্টর রাশেদ চার বছর ধরে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার কথা অনুযায়ী এর আগে আর কোনোদিন এমন যাত্রী সংকটে পড়তে হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা গত এক সপ্তাহ আগেও সারাদিনে মিরপুর-ইপিজেড তিনবার করে যাতায়াত করতাম। প্রতিবার ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা আসতো। এখন যাত্রী না থাকায় ফাঁকা বাস নিয়ে যেতে হয়, আবার খালি বাস নিয়েই ফিরতে হয়। অযথা তেল খরচ করে মালিক আমাদের বেতন দেবে ক্যামনে। গত দুই/তিন দিনে অনেক মালিক তার গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের গাড়িও বন্ধ করে দেবে।
চন্দ্রা থেকে গুলিস্তান চলাচলরত ওয়েলকাম পরিবহনের কন্ডাক্টর ইব্রাহিম বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় যাত্রী নেই। যাত্রীর জন্য যদি বাসস্ট্যান্ডে একটু দেরি করি, তাহলে বাসে থাকা যাত্রীরা গালিগালাজ শুরু করেন। যাত্রী না পাইলে বাস চলবো কী করে? আমরাই-বা চলবো কী করে? কী এক করোনা ভাইরাস আইলো, আমাদের রুটি-রুজি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন অনেক মানুষ। ইতোমধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টারসহ অনেক কিছুই বন্ধ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৬ মার্চের স্বাধীনতা অনুষ্ঠানও বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২০
এসআরএস