ঢাকা, শনিবার, ১১ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এ যেন এক অচেনা শিবচর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২০
এ যেন এক অচেনা শিবচর

মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলাটি উন্নয়নের দিক দিয়ে দেশের মধ্যে এক অন্যতম উপজেলা। দিনভর কর্মব্যস্ত মানুষের পদচারণায় মুখোর শিবচর আজ এক অচেনা নগর! যেন দুর্যোগের ঘনঘটা শিবচরের আকাশজুড়ে।

করোনা ভাইরাসের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মাদারীপুর জেলার এ উপজেলাটিতে বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ। পৌর এলাকার বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ রয়েছে গত শুক্রবার সকাল থেকে।

নেই মানুষের পদচারণাও। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে আসছে না সাধারণ মানুষ। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে মুদি আর ওষুধের দোকান শুধু খোলা থাকছে। তবে ক্রেতাদের দেখা খুব একটা দেখা মেলে না সারাদিনে।

এদিকে, উপজেলার চারটি এলাকাকে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ওই চারটি এলাকা প্রবাসী অধ্যুষিত। যারা সম্প্রতি বাড়িতে এসেছেন। উপজেলার বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রাম, পাঁচ্চর ইউনিয়নের একটি গ্রাম ও পৌর এলাকার দুটি ওয়ার্ডের সঙ্গে অন্য স্থানের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার প্রায় ৭০ হাজার মানুষই এখন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এদিকে অবরুদ্ধ চারটি এলাকা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।  

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চারটি এলাকার কোনো মানুষ বাইরে বের হতে পারবে না। কেউ ওই এলাকায় যেতেও পারবে না। ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা থাকবে। এছাড়াও কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ থাকবে। প্রশাসনের টিম প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্ধারিত চারটি এলাকা ছাড়াও পুরো উপজেলাতেই জনসমাগম এড়াতে বাজারের নিত্যপণ্য ও ওষুধ ছাড়া অন্য সব দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব প্রকার গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।

রোববার (২২ মার্চ) উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহনও নেই। রাস্তা-ঘাট অনেকটাই জনশূন্য। শিবচর উপজেলা জুড়ে নেমে এসেছে যেন ভুতুড়ে ছায়া।

অবরুদ্ধ উপজেলার বহেরাতলা ইউনিয়নের গ্রামটি থেকে মুঠোফোনে এক তরুণ জানান, ছবিতে দেখা যুদ্ধকালীন কোনো গ্রামের চিত্র যেন। সুনসান চারপাশ। রাস্তা-ঘাটে কেউ নেই। যেন পুরো গ্রামটি আজ প্রাণহীন!

পাঁচ্চর এলাকার এক যুবক জানান, শুক্রবার থেকে গ্রামটি অবরুদ্ধ। আমরাও অতি দরকার ছাড়া বাড়ির বাইরে যাই না। আল্লাহ যেন এই ভাইরাস থেকে আমাদের দ্রুত মুক্তি দেয়।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ চারটি এলাকাকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা কন্ট্রলরুমও চালু রেখেছি। যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের টিম প্রস্তুত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।