ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শিবচরে নিস্তব্ধতার ছয় দিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
শিবচরে নিস্তব্ধতার ছয় দিন

মাদারীপুর: করোনা ভাইরাস। বর্তমানে এ এক আতঙ্কের নাম। এতোদিন দেশের বাইরের খবর পড়ে বিস্ময় প্রকাশ করলেও এবার নিজেদের ঘরে হানা দিয়েছে মরণঘাতী এই ভাইরাস। স্বাস্থ্য বিভাগের মতে মাদারীপুর জেলার শিবচর অত্যন্ত ঝুঁকিতে থাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা শিবচরবাসীর মধ্যে।

পুরো শিবচরজুড়ে আজ নিরবতা। বুধবার (২৫ মার্চ) করোনা প্রতিরোধের জন্য অবরুদ্ধ শিবচরের নিস্তব্ধতার ছয় দিন! চরম ঝুঁকিতে থাকার কারণে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশাসন উপজেলার চারটি এলাকা লকডাউন করে দেয়।

পরের দিন শুক্রবার থেকে প্রশাসনের কড়াকড়ি বাড়তে থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ-বাহির সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও পুরো উপজেলাতেই বন্ধ রাখা হয় গণপরিবহন। হাট-বাজারের দোকানপাট। শুধুমাত্র নিত্যপণ্য ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। জনসমাগম এড়ানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলতে থাকে মাইকিং। উদ্বুদ্ধ এই পরিস্থিতি নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না শিবচরের সাধারণ মানুষ। হঠাৎ করেই কোলাহলে মুখোর শিবচর যেন এক নিস্তব্ধ নগরী।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চারটি এলাকাকে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ওই চারটি এলাকা প্রবাসী অধ্যুষিত। যারা সম্প্রতি বাড়িতে এসেছেন। উপজেলার বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রাম, পাঁচ্চর ইউনিয়নের একটি গ্রাম ও পৌর এলাকার দুটি ওয়ার্ডের সঙ্গে অন্য স্থানের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার প্রায় ১২ হাজার মানুষ এখন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এছাড়াও বিশেষ নজরদারি রয়েছেন প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ।

এদিকে, অবরুদ্ধ চারটি এলাকা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। ওই এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য ও ওষুধ সামগ্রী। গত সোমবার থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরীর পক্ষ থেকে ২ দফায় ১৮শ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়।

মো. রুহুল আমিন নামের এক যুবক বাংলানিউজকে বলেন, করোনা আতঙ্কেই দিন কাটাতে হচ্ছে। শিবচর যেহেতু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তাই আমরাও সচেতনতা অবলম্বন করছি যতটুকু পারা যায়।

এদিকে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই শহর ও আশেপাশের এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এছাড়া বুধবার বিকেল থেকেই সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাস ঝুঁকির মধ্যে মাদারীপুর জেলা অন্যতম। এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য মঙ্গলবার বিকেল থেকে শহরের সব মার্কেট ও রাস্তা ঘুরে সব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামের হাট-বাজারের দোকানগুলোও পুলিশ গিয়ে বন্ধ করে দেয়। শুধু ওষুধের দোকান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান, কাঁচাবাজারের দোকান খোলা থাকবে।
 
জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দেশে এখন করোনা ভাইরাসের দুর্যোগ চলছে। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনী এসেছে।  করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমরা যেভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি সে কাজেই সেনাবাহিনী সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।